
Jamaat Dhaka City North
18.7K subscribers
About Jamaat Dhaka City North
Official WhatsApp Channel of Dhaka City North, Bangladesh Jamaat-e-Islami. 👉Web: https://www.jamaatdhakacitynorth.org Follow us on: 👉FB: https://www.facebook.com/bji.dcn 👉TW: https://twitter.com/bjidcn 👉IG: www.instagram.com/bji_dcn 👉TG: https://t.me/bjidcn 👉YT: https://www.youtube.com/bjidcn
Similar Channels
Swipe to see more
Posts

https://www.youtube.com/live/mQcivqzKW7k?si=uL0rWd3qAWuusFol

*মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত* ২৮ মে বুধবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ফ্যাসিবাদের চরম জুলুমের শিকার মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তিলাভ করেন। এ সময় শাহবাগ মোড়ে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে মজলুম জননেতা জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামের জন্য সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম-এর সঞ্চালনায় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এড. মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রব, অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও জনাব মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মোঃ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি এড. জসিমউদ্দীন সরকার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মুফতি সুলতান মহীউদ্দিন ও মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইউসুফ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শামিউল হক ফারুকি ও মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, শহীদ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র মাসুদ সাঈদী, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পুত্র ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পুত্র আলী আহমাদ মাবরুর, জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামের পুত্র তাসনিম আজহার সুমন, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার পুত্র হাসান জামিল এবং জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলার আইনজীবীগণ প্রমুখ। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আগেই বলেছি এটা কোনো সভা নয়। জাস্ট মজলুম ভাইয়ের, মজলুম নেতার প্রাথমিক অভিব্যক্তি প্রকাশের একটা আয়োজন। প্রচন্ড গরমে এখানে আপনারা হাজির হয়েছেন। মঞ্চে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আছেন, আমাদের বন্ধু সংগঠনসমূহের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ আছেন, ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আছেন, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আছেন এবং আপনারা আমরা সবাই আছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্মানিত এই ভাইয়ের বক্তব্য অচিরেই আরও বড় পরিসরে শুনব ইনশাল্লাহ। এই ঢাকাতেই শুনব ইনশাআল্লাহ। এজন্য আমি আজকে আমার বক্তব্য দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছি না। আমি শুধু আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করি যে মানুষটাকে সুদীর্ঘ ১৪টি বছর ঘাড়ের উপর মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়ে জুলুম করা হয়েছে। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মহান রব তাঁকে আমাদের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন। আমাদের এই ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন সবাই। আল্লাহ যেন তাঁকে নেক হায়াত দারাজ করেন, তিনি যেন সুস্থ থাকেন এবং জাতির প্রয়োজনে তিনি যেন তাঁর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অব্যাহত রাখতে পারেন। আমীরে জামায়াত বলেন, কিছুক্ষণ আগে এখানে বলা হয়েছে আমার নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, আমি তা মোটেই মনে করি না। আমি মনে করি এ দেশের ১৮ কোটি মজলুম মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জালিম সরকারের পতন হয়েছে। আমরা এর মূল ক্রেডিট আল্লাহ তায়ালাকে দেই। আর জমিনের এই ক্রেডিট এ দেশের জনগণকে দেয়ার পক্ষে। আমরা এক থাকব। জাতির প্রয়োজনে একপথে হাঁটবো এবং জাতির প্রয়োজনে সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ। সবাই ভাল থাকুন। সদ্য কারামুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মজলুম জননেতা জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমি প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকার পর আজ সকালে মুক্ত হলাম। আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন। স্বাধীন দেশে আমি একজন স্বাধীন নাগরিক। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমরা রাস্তা বন্ধ করে এখানে সমাবেশের আয়োজন করেছি; তাই জনগণের কষ্ট যাতে বেশি না হয়, এজন্য আমি সংক্ষিপ্ত কিছু কথা বলব। অবশ্যই আপনাদের সাথে আবারও দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। আমি সর্বপ্রথম কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে যিনি আসমান থেকে ফায়সালা করেছেন। এরপর আমাদের মহামান্য আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তাঁরা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। এতদিন ন্যায় বিচার ছিলো না; আদালতকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আশাকরি সামনের দিনগুলোতে আদালত জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী তাঁরা যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন। তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার মামলায় যেসকল আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছিলো তাদেরকে। আমি যতদূর পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, বুঝতে পেরেছি অত্যন্ত সাবলীল ও সুন্দর যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে আমার মামলার অসাড়তা অত্যন্ত দূরদর্শিতার সাথে সবকিছু প্রকাশ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে, এই মামলার মাধ্যমে আগের সরকার কীভাবে নির্মমভাবে আমাদের নেতৃবৃন্দকে হত্যাকা-ের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে। আরও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের কারণে আজকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি; সেই ৩৬ জুলাই অর্থাৎ ৫ আগস্টের মহাবিপ্লবী নায়কদেরকে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাবো এই ক্ষেত্রে ছাত্র সমাজকে যারা তাদের অতীতের গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। ছাত্রসমাজই রাজপথে নেমে রক্ত ঢেলে তারা বিগত সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। যার কারণে ফ্যাসিস্টদের দর্প, গর্ব, অহঙ্কার চুরমার করে দিয়ে ছাত্রসমাজ আবার দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছে। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, ছাত্র-শিক্ষাক-যুবক সকল শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ এমনকি শিশু বাচ্চাদেরকেও। আমি দেখেছি তারাও রাজপথে নেমে এসেছে। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে যারা জনগণের পক্ষ নেয়ার কারণে আজ আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদেরকে যারা আল্লাহর ওয়াস্তে আমার মুক্তির জন্য নামাজ আদায় করেছেন, রোযা রেখেছেন, আবার অনেকে মানত করেছেন; তারা ইসলামী আন্দোলনকে মহব্বত করার কারণে এবং ইসলামকে ভালোবাসার কারণে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে উত্তম জাযাহ দান করুন। আমি স্মরণ করছি অত্যন্ত দুঃখ, বেদনা, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যারা আমার নেতা ছিলেন তাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, শহীদ কামারুজ্জামান, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ও শহীদ মীর কাশেম আলীকে। আমি আরও স্মরণ করি মিথ্যা ও সাজানো মামলায় যাদেরকে কারাগারে আটক রেখে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে; সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম, সাবেক নায়েবে আমীর মাওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ, মাওলানা আব্দুস সোবহান ও আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং আব্দুল খালেক ম-লকে। সাথে সাথে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও স্মরণ করি যাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে। আরও স্মরণ করি সাবেক আমীর জনাব মকবুল আহমদ ও নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাযির আহমদকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের সকলের শাহাদাত কবুল করুন আমীন। এ সকল ভাইদের শোক-সন্তপ্ত, পরিবার পরিজনের প্রতি আমি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ তায়ালা তাদের সকলকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন। জনাব আজহারুল ইসলাম আরও বলেন, যারাই এসব হত্যাকা-ের সাথে যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করা হোক। তা না হলে এই খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে। এখান থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমার কী অপরাধ ছিলো! আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখাই কী আমার অপরাধ ছিলো? আজ আল্লাহর রহমতে আমীরে জামায়াতের কাছ থেকে ফুলের মালা পাচ্ছি। গলায় রশি ঝুলানোর পরিবর্তে ফুলের মালা পাচ্ছি। আমার জীবন থাকতে, একফোঁটা রক্ত থাকতে আজীবন যেন আমি ইসলামী আন্দোলনের জন্য শহীদ হতে পারি সেই তাওফিক আল্লাহর কাছে চাই। মনে রাখবেন আমাদের সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আজ হোক, কাল হোক মৃত্যুবরণ তো করতেই হবে। আমরা কেউ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারবো না। আব্দুল কাদের মোল্লা ভাই, আমাকে প্রায়ই বলতেন, ‘আজহার ভাই, আমরা যে পরিমাণ গুনাহ্গার, তাতে জান্নাত পাব না। জান্নাত পাওয়ার একটাই মাত্র পথ আমাদের শাহাদাত বরণ করা। এই শাহাদাতই আমাদেরকে জান্নাত দিতে পারে।’ তাই যে দল, যে জাতি, যে ব্যক্তি শাহাদাতের তামান্না নিয়ে এগিয়ে যায়, সেই দল সেই জাতিকে কেউ দমাতে পারে না। তিনি বলেন, আপনাদের সকলের মাধ্যমে বাংলাদেশের আপামর জনগণের কাছে আহ্বান করতে চাই, এই দেশ আমাদের, এই দেশ আমাদের সবার। এই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, চিন্তা-চেতনা অনুযায়ী এই দেশটাকে গড়ার জন্য আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। অবশ্যই আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার আর পাওয়ার কিছুই নেই। আমরা যদি দ্বীন প্রতিষ্ঠা করে যেতে পারি এটাই আমার একমাত্র পাওয়া, আর কোন পাওয়ার নেই। যেখান থেকে যে ভূমিকা রাখা দরকার সেখান থেকে সেই ভূমিকা রাখবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আমি আমার সংক্ষিপ্ত কথা শেষ করলাম।


*আদাবরে এতিমদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ* সংস্কার, বিচার ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন -ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। এতিমরা অসহায় ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির অংশ; তাই এতিমদের কল্যাণে ও দুর্দশা লাগবে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, দাতা সংস্থা, দাতব্য প্রতিষ্ঠার সহ সমাজের বিত্তবান মানুষদের মুক্ত হস্তে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আদাবর থানা জামায়াত আয়োজিত এতিমদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর আল আমীন সবুজের সভাপতিত্বে ও সেক্রটারি আশরাফুজ্জামান মিঠুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ড. রেজাউল করিম বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এতিমদের প্রতি সদাচারণ ও অনুগ্রহ প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কালামে হাকীমে এতিমের অধিকার, এতিমের প্রতি দয়া-অনুগ্রহের মর্যাদা ও পুরস্কারের কথা বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। কালামে পাকের সূরা বাকারাহর ২২০ নং আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর তোমার কাছে তারা জিজ্ঞেস করে, এতিম সংক্রান্ত বিধান। বলে দাও, তাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে গুছিয়ে দেওয়া উত্তম। আর যদি তাদের ব্যয়ভার নিজের সাথে মিশিয়ে নাও, তাহলে মনে করবে তারা তোমাদের ভাই। বস্তুত অমঙ্গলকামী ও মঙ্গলকামীদেরকে আল্লাহ জানেন। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তোমাদের ওপর জটিলতা আরোপ করতে পারতেন। নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী, মহাপ্রাজ্ঞ।’ এতিমের সম্পদ সংরক্ষণ ও প্রত্যার্পণ সম্পর্কে সূরা আন নিসার ২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এতিমদেরকে তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও। মন্দ মালামালের সাথে ভালো মালামালের অদল-বদল করো না। আর তাদের ধন-সম্পদ নিজেদের ধন-সম্পদের সাথে সংমিশ্রিত করে তা গ্রাস করো না। নিশ্চয় এটি বড়ই মন্দ কাজ’। তিনি এতিমদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠনের সকল স্তরের জনশক্তিকে সামর্থ অনুযায়ি কাজ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, ইসলাম একটি কালজয়ী ও শাস্বত জীবনাদর্শ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন অন্য সব দ্বীনের ওপর দ্বীনে হক্ব তথা ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য । মূলত, জামায়াতের ইসলামী এদেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার করে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়। আমরা এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যে সমাজে সততা, যোগ্যতা ও তাক্বওয়া অনুযায়ি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব প্রদান করা হবে। সেখানে কোন ধর্ম, মত ও পথকে প্রাধান্য দেওয়া হবে না বরং সকল ক্ষেত্রে সততা, দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতাই হবে যোগ্যতার মানদণ্ড। জামায়াত সকল শ্রেণির নাগরিকের মধ্যে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও পারস্পারিক আন্তরিকতা প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। তিনি আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, পতিত বাকশালী ও ফ্যাসীবাদীরা রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই বিদ্যমান অবস্থায় দেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার, গণহত্যাকারীদের বিচার এবং সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ভোটাররা যাতে পছন্দের প্রার্থী নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় ফ্যাসীবাদ নতুন করে মাথাচাঁড়া দিতে পারে।


আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে।

*ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের প্রতিবাদ* ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ‘বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চায় ভারত’ মর্মে যে মন্তব্য করেছেন তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ৩১ মে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে, ‘বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চায় ভারত’ মর্মে যে কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেছেন আমরা তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের মত একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এ ধরনের মন্তব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল এবং জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত সনদের লঙ্ঘন। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে তা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণই ঠিক করবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে জাতিসঙ্ঘ সনদ মেনে চলার জন্য আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের অযাচিত ও আপত্তিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”


*“ইসলামী আন্দোলনের জন্য কষ্ট, জুলুম, নির্যাতন, জেল ও ফাঁসি হতেই পারে” - এটিএম আজহারুল ইসলাম* ২৮ মে বুধবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ফ্যাসিবাদের চরম জুলুমের শিকার মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তিলাভ করেন। শাহবাগ মোড়ে মজলুম জননেতা জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা দেওয়ার পর তিনি মগবাজারস্থ জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম গ্রহণ করেন। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মহানগরীর নেতাকর্মী, শহীদ পরিবারের সদস্যগণ, আইনজীবীগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় সদ্য কারামুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, সম্মানিত আমীরে জামায়াত, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, উপস্থিত ভাই ও বন্ধুগণ, সাংবাদিক বন্ধুগণ আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ শারীরিক ও দৈহিকভাবে ভালো আছি। আমি বয়সে বৃদ্ধ হলেও চিন্তা-চেতনায় এখনো শারীরিক ও মানসিকভাবে যুবক। তিনি আরও বলেন, আমাকে আল্লাহ কেন বাঁচিয়ে রেখেছেন ৫ আগস্ট সকাল পর্যন্ত বুঝতে পারিনি। ধারণা করিনি আপনাদের সাথে দেখা হবে। আমি আন্তরিকভাবেই কামনা করতাম ২০১৯ সালে আদালত যখন আমাকে ফাঁসির হুকুম দিল, তখন একদম মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলাম আল্লাহর কাছে হাজির হওয়ার জন্য। এটাই জান্নাতে যাওয়ার সহজ পথ। এইজন্য সবার কাছে থেকে বিদায় নিয়ে রেখেছিলাম। সবচেয়ে কষ্ট হলো পুরাতন আমলের ফাঁসির সেলের পাশেই প্রায় ১০ মাস ছিলাম। নিজামী ভাইকে ওখানে কিছুদিন রাখা হয়েছিল। উনি খুব কষ্ট করেছেন। তারপর আমি আসলাম সেখানে। তিনি বলেন, এরপর আলহামদুলিল্লাহ ৫ আগস্টে স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি হল। ৫ আগস্টের সকাল পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল যেহেতু আওয়ামী লীগ ১০/২০ হাজার লোক হত্যা করে হলেও তারা ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে। এদের সেই সুযোগও আছে। যাই হোক আমার কাছে রাজনীতির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ৫ আগস্ট সকাল ৯টা/১০টার দিকে টিএসসির দিকে (তখন আইন-শৃঙ্খলা কিছুটা ঢিলা থাকায় মেমরি কার্ড প্রবেশ করত, ফলে মাঝে মাঝে খবর পেতাম) দেখলাম ছোট্ট একটি বাচ্চা ৫-৬ বছর হবে পাশে দাঁড়ানো পুলিশকে ঘুসি মারছে। আমি তখন বললাম এ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরের ঘটনা আপনারা জানেন। আল-হামদুলিল্লাহ আজকে আমি মুক্ত হলাম। তিনি আরও বলেন, আমি শুধু সংক্ষেপে বলতে চাই, কী জন্য আমি গ্রেফতার হলাম। আমি তো চুরি, ডাকাতি বা জমি দখল কোনো কিছুই করিনি। তবে অভিযোগটা হলো আমি ইসলামী আন্দোলন করি। যখন নিজামী ও মুজাহিদ ভাইসহ সবাই গ্রেফতার হলো এরপর প্রায় দেড় বছর আমি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ছিলাম। তখনো আমি ধারণা করিনি যে, এ সরকার আমাকে গ্রেফতার করবে। তবে আমি ধারণা করতেছিলাম যে, আমি গ্রেফতার হবো। গ্রেফতার তো হয়েই গেলাম। গ্রেফতার হওয়ার পরে ১২/১৪টা মামলা দেয়ার পরে যখন আমি জামিনে বের হয়ে আসি, তখন আটকাতে পারল না। এরপরে শুনি আমাকে এই মামলা দিয়েছে। তখন আমার আস্থা ছিল এ মামলায় আমাকে কিছু করতে পারবে না। যখন আইন সংশোধন হলো তখন বুঝলাম যে এটা তো সাজানো নাটক? তখন মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকলাম। আল্লাহ ভরসা ভাগ্যে যা আছে সেটাই হবে ইনশাআল্লাহ। এরপর তো ফাঁসি থেকে মুক্ত হয়ে আপনাদের কাছে চলে আসছি। তিনি আরও বলেন, আমার অপরাধই ছিল ইসলামী আন্দোলন করা। আমি শুধু এটুকু বলব যে, ইসলামী আন্দোলন করার কারণেই এটা যখন আমি প্রথম ইসলামী আন্দোলনে যোগদান করি। আমি মনে মনে ধারণা করি ইসলামী আন্দোলনের জন্য কষ্ট, জুলুম, নির্যাতন, জেল ও ফাঁসি হতেই পারে। এটা নিয়ে চিন্তা করি নাই। আমার যারা কর্মী, সহকর্মী ছিল তারাও জানেন। আমি কোনো সময় দুশ্চিন্তা করতাম না। ইসলামী আন্দোলনের করার কারণে শহীদ নিজামী ভাই, মুজাহিদ ভাই, কামারুজ্জামান ভাই, কাদের মোল্লা ভাই, মীর কাসেম আলী ভাই তাদের সরাসরি হত্যা করা হয়েছে। আর সিনিয়র কয়েকজন নেতা চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন। তাদের অপরাধটা কী ছিল। নিজামী ভাই ও মুজাহিদ ভাই মন্ত্রী ছিলেন; তাদের এক টাকার দুর্নীতির প্রমাণ কেউ দেখাতে পারে নাই। শুধু ইসলামী আন্দোলনের জন্যই তাদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলাম-ই মুক্তির একমাত্র পথ। আমার ক্ষুদ্র বয়সে যতটুকু পড়াশোনা করেছি আমার কাছে মনে হয়েছে, দুনিয়াটা ইসলামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আপনি খেয়াল করবেন গ্রামের চেয়ারম্যানরা তার প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। দুর্বলদের কিন্তু ঘায়েল করে না। যার সমান শক্তি আছে তাকেই ঘায়েল করে। আজকে ইসলামের বিরুদ্ধে সকল শক্তি এক হয়েছে। তবে ইসলাম সত্যের উপর আছে; এই শক্তিকে দমাতে পারবে না। অতীতে তারা বহু ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। তাই আমি বলি, ইসলাম খরস্রোতা নদীর মত, খরস্রোতা নদী প্রবলভাবে চলতেই থাকে। যতই বাঁধ দেন না কেন, পানি জমা হয়ে বাঁধ ভেঙে তা প্রবল বেগে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেই। যেটা গত ৫ আগস্টে প্রমাণিত হলো। জামায়াতকে বেআইনি ঘোষণা করে তারা জামায়াতকে কী ঠেকাতে পেরেছে? না, পারেনি। তিনি আরও বলেন, আমাকে ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াত অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে গ্রেফতার করা হলো। ঐ সময় যে জনশক্তি ছিল, এখন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ এই ১৫ বছরে আপনারা প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, এই জীবনে আমাকে অনেকে অনেক কথা বলবে কিন্তু সেই কথার সাথে আমি যদি আপস করি, তাহলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা অবশ্যই ক্ষমতায় যেতে চাই, তবে যেনতেন প্রকারে না। আমরা ইসলামকে সাথে নিয়েই ক্ষমতায় যেতে চাই। ইসলামকে রেখে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। ইসলাম ছাড়া আমি হয়তো ক্ষমতায় যেতে পারবো, মন্ত্রী হতে পারবো কিন্তু ইসলাম তো ক্ষমতায় যাবে না। আমরা যে ইসলামী আন্দোলনের কাজ করতেছি তা তখনই স্বার্থক হবে, যখন ইসলামকে নিয়ে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারবো। তখন তাদের শহীদ হওয়া স্বার্থক হবে যখন ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়া যাবে। যারা দুনিয়ার জীবনের চেয়ে আখিরাতের জীবনকে প্রাধান্য দেয়, তারাই সত্যিকার ইসলামী আন্দোলন করার যোগ্য, তারাই আসল মুজাহিদ, তারাই আসল জিহাদের যোগ্য। আর তারাই দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম। দুনিয়াকে আল্লাহ ত্যাগ করতে বলেন নাই, দুনিয়া ভোগ করব তবে সেটা যেন ইসলামী আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত না করে। ইসলামের কাজ যখন আসবে, তখন দুনিয়ার কাজ ছেড়ে দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হব। এটার নামই হলো ইসলামী আন্দোলন। আমরা যখন এই জাতীয় লোক তৈরি করতে পারব, ইসলামের অগ্রযাত্রা তত বেশি অগ্রসর হবে ইনশাআল্লাহ। এটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে আল্লাহ বলেন, ‘যারা দুনিয়ার জন্য কাজ করে আমি তাদের দুনিয়া দেই আর যারা আখিরাতের জন্য কাজ করে আমি তাদের আখিরাত দেই।’ আপনি সিদ্ধান্ত নেন কোনটার জন্য কাজ করবেন। মহান রব ভারসাম্য রক্ষার জন্য অন্য এক জায়গায় আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, ‘হে রব! দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদের কল্যাণ দান করুন।’ অকারণে দুনিয়ার পিছনে ছুটবেন না, আবার দুনিয়া ছেড়ে আখিরাতের পিছনেও ছুটবেন না। উভয়কে ব্যালেন্স করেই চলতে হবে। যাতে করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এটা অগ্রগণ্য হতে পারে। আল্লাহ তাওফীক দিলে আপনাদের সামনে আরও কথা বলব। যারা আমাদের কাছ থেকে চলে গেছেন আল্লাহ তাদের শাহাদাত কবুল করুন, তাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন, জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। ৩৬ জুলাই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। যারা চিকিৎসারত আছেন তাদেরকে আল্লাহ স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে আনুন। আমরা যেন সবাই মিলে এই দেশটাকে ইসলামের জন্য এগিয়ে নিতে পারি। অবশ্যই অবশ্যই আগামীর শতাব্দী হবে ইসলামের শতাব্দী। এসময় আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় ভাইয়ের নসিহা শুনেছি। তার কথা প্রাণ ভরে আরও শুনবো। আমরা আমাদের ভাইয়ের জন্য দোয়া করি। শারীরিক ও মানসিকভাবে অবশ্যই তাঁর উপরে প্রচণ্ড চাপ গেছে; এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণ করার যে তাওফীক তাঁকে দান করেছেন তার জন্য শুকরিয়া আদায় করি। আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণ করার জাযাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁকে দান করুন। আপনারা জানেন, জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তাঁর পরিবার অনেকটাই ছিন্নভিন্ন। ছোট্ট মেয়েটা ছাড়া এখন দেশে আর কেউ নাই। একমাত্র ছেলে দেশের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন অনেকের মত। এর মাঝে তিনি জেলে থাকা অবস্থায় ভাবীও (আজহার সাহেবের স্ত্রী) দুনিয়া থেকে চলে গেছেন। আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া যে, অন্তত তিনি তার স্ত্রীর জানাজায় হাজির হয়ে নিজে বিদায় দিতে পেরেছেন। আল্লাহ তায়ালা এইটুকু সুযোগ তাঁকে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ জীবনটা তাদের দু’জনের পরস্পরের উপর যে হক ছিলো; সঙ্গতকারণে আল্লাহর জন্য সে হক আদায় করা সম্ভব হয়নি। আল্লাহ যেন তাদেরকে আদালতে আখেরাতে একসাথে হাসর নসিব করেন। জান্নাতে আল্লাহ যেন আবার তাদেরকে একসাথে চমৎকারভাবে একত্রিত করে দেন, পরিবারের অন্যান্য সদস্যবর্গসহ। আলহামদুলিল্লাহ আমরা অনেক জায়গায় যেতাম অনেকে জিজ্ঞাসা করতেন আজহার ভাইয়ের কী অবস্থা। উনার মুক্তি কবে হবে? কোনো ষড়যন্ত্র হবে কিনা? অনেক প্রশ্ন ছিল। আমরা বলতাম যে, সবকিছু আল্লাহ তায়ালার ফয়সালার উপর ছেড়ে দিয়েছি। তবে একটা জিনিস আমরা বিশ্বাস করি যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ এক এক করে চলে গেলেন; কাউকে ফাঁসিতে পাঠিয়ে খুন করা হলো, কাউকে জেলে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হলো। আল্লাহ যেহেতু তার এই বান্দাকে জীবিত রেখেছেন, তাহলে নিশ্চয়ই এই বান্দার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সত্যকে পৃথিবীবাসীর সামনে পরিষ্কার করবেন। আল্লাহ তায়ালার লাখো শুকরিয়া যে আল্লাহ সেই কাজটিই করেছেন। এর মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে যে, আমাদের কলিজার টুকরা সমস্ত নেতৃবৃন্দকে ঠান্ডা মাথায় বিশেষ উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছে। সেই উদ্দেশ্যটা আর কিছু নয়। সেটা ছিল তারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিলেন। আল্লাহ তায়ালাকে পরম পরাক্রমশালী এবং প্রশংসিত হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। সমস্ত পরাক্রমের মালিকও তিনি সঙ্গত কারণেই প্রশংসা পাওয়ার মালিকও তিনি। এটাই তাদের অপরাধ। তিনি বলেন, সম্মানিত নেতৃবৃন্দ চোখের সামনে তারা বুঝতে পারছিলেন যে, তিলে তিলে তাদেরকে ফাঁসির মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এতটাই তাওয়াক্কুলের শক্তি, এতটাই সবর এখতিয়ার করার তাওফিক দান করেছিলেন যে, তারা কেউ এক সেকেন্ডের জন্যও মোটেই বিচলিত হননি। যারা দুনিয়া থেকে আগে চলে গেছেন আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসার জান্নাতে তারা আছেন। কিন্তু ফাঁসির এই দণ্ড মাথার উপরে নিয়ে তিলে তিলে অপেক্ষা করা, বেঁচে থাকা; আল্লাহ তায়ালা যদি তাদের মনকে শক্ত না রাখেন, ঈমানের মজবুতি যদি দান না করেন, বান্দা যদি সবকিছু একেবারে আল্লাহর উপর ছেড়ে না দেন; তাহলে কোন মানুষের পক্ষে এটা হজম করা সম্ভব নয়। কোনো এক বিশিষ্ট লোক বলেছিলেন, যাদের রায়ের আদেশ প্রথম শোনানো হয়, তখন তারা অস্বাভাবিক আচরণ করেন। অভিশাপ দেন, কেউ গালি-গালাজ করেন। বাস্তবায়নের সময় তারা অনেকেই স্বাভাবিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এজন্য আগে থেকে তাদেরকে মেডিকেল চেক আপ-এর মধ্যে সার্বক্ষণিক রাখা হয়। তবে শুধু জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ ব্যতিক্রম ছিলেন। তাদেরকে রায় শুনানোর পর থেকে রায় বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত এক মিনিটের জন্যও তাদের চেহারায় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। আল্লাহু আকবার। পরিবর্তন হয়নি এই কারণে যে, তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে ঐ আওয়াজ শুনে শুনে দুনিয়া থেকে যেতে চান। ‘হে প্রশান্ত আত্মা! তুমি তোমার রবের দিকে ফিরে আস সন্তুষ্ট ও সন্তোষ ভাজন হয়ে।’ আমরা বিশ্বাস করি তারা এই আওয়াজ শুনে শুনে তারা বিদায় নিয়েছেন। আল্লাহর আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন এবং আমরা ধারণা করছি আল্লাহর প্রতিশ্রুত সেই জান্নাতে হয়ত তারা জায়গা পেয়ে গেছেন। আজকে এতটুকু পর্যন্ত আমরা শেষ করতে চাই। আরও কিছু প্রোগ্রাম আছে। তাঁর (জনাব আজহার) শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম প্রয়োজন। কয়টা দিন তাঁর সাক্ষাতের এবং তাঁর কাছে কিছু জানা শোনা থেকে সবর করলে ভাল হয়। এরপর তিনি আমরা আশা করি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আমাদের দেখা হবে, মোলাকাত হবে এবং আমরা একসাথে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই ঢাকায় যে এলাকায় তিনি দীর্ঘ দিন সংগঠন পরিচালনা করেছেন, কাজ করেছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন আমাদের এই প্রিয় ভাইটিকে নিয়ে বড় পরিসরে প্রোগ্রাম করার মাধ্যমে ঢাকাবাসীর কাছে দোয়া চাইব। তিনি তাঁর জন্মস্থানেও যাবেন ইনশাআল্লাহ যে সময় তিনি কমফোর্ট ফিল করবেন। সারা দেশের ন্যায় তাঁর নিজ এলাকাতেও সংগঠন বড় প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা ইচ্ছা করেই তাঁর নিজ এলাকাকে প্রোগ্রাম করা থেকে বাদ রেখেছিলাম। আমরা পূর্বেই বলেছিলাম আল্লাহ চাহে তো আমাদের প্রিয় ভাইসহ রংপুরবাসীকে নিয়ে বড় পরিসরে প্রোগ্রাম করব। আল্লাহ উনাকে সাথে নিয়ে সেই প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করার তাওফীক দান করেন। আপনারা দোয়া করবেন, আমাদের এই আশাকে আল্লাহ তার বারাকাহ দিয়ে রহমত দিয়ে সাহায্য করেন। আমরা যেন আমাদের ভাইকে নিয়ে আল্লাহর দাওয়াত উত্তম পন্থায় মানুষকে সত্যের দিকে, কল্যাণের দিকে, দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির দিকে প্রাণভরে ডাকতে পারি। আল্লাহ যেন আমাদের সেই তাওফীক দান করেন। আপনারা শাহাবাগ থেকে আবার এখানে অনেক কষ্ট করে এসেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উত্তম জাযাহ দান করুন এবং আগামীর হক্ক কায়ের লড়াইয়ের জন্য আল্লাহ আমাদের বুক শক্ত করে দিন, প্রশস্ত করে দিন। আমাদের পা মজবুত করে দিন। আমাদের ভাইসহ সবাইকে হায়াতে তায়্যেবা দান করুন। সবশেষে বিকালে জনাব আজহারুল ইসলাম মগবাজার কাজী অফিস লেনে সাবেক আমীর প্রফেসর গোলাম আযমের কবর, আজমপুর কবরস্থানে সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও তাঁর স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন।


https://youtube.com/live/YksBtF8nL5g?feature=share