Suprokash WhatsApp Channel

Suprokash

168 subscribers

About Suprokash

বাংলা সাহিত্যের প্রকাশনা। আলোেকবৃত্তের বিপ্রতীপে থাকা মানুষের আখ্যান, ধ্রুপদী কথাসাহিত্য, চিন্তাপ্রধান গদ্য এবং স্মৃতি জুড়ে থাকা মানুষের ইতিহাসের কথা বলাই সুপ্রকাশের স্বনির্বাচিত দায়।

Similar Channels

Swipe to see more

Posts

Suprokash
Suprokash
6/21/2025, 9:52:19 AM

হ্যালো, হ্যালো, এক— দুই— তিন... হ্যালো... কিংবা—একটি ঘোষণা, আজ বৈকাল চার ঘটিকায়... নাহ্‌, সেই সুর তো কানে বাজছে না। এতো অন্য কণ্ঠ। রিক্সায় মাইক বেঁধে একটি বস্ত্রবিপণির বিপুল ছাড়ের ঘোষণা করে যাচ্ছে, কিন্তু সেই কণ্ঠ উদাত্ত, ভারী, ভরাট... নাহ, তেমন নয়, সে কণ্ঠ ছিল গোরাদার, লম্বা, ফর্সা, ঘাড়ের পিছনে অনেকটা চুল নামানো, ইউকাট—সেই সময় খুব চলত কিনা। কয়েক বছর পর শহরে ফিরেছি। চোখ ফিরিয়ে দেখলে নজরে পড়ে অনেক কিছুর বদল। তাহলে গোরাদাও কি বদলে গেল? না। গোরাদা আর নেই। সে এখন অন্য পৃথিবীতে। অথচ একটা সময় ছিল, শহরের মানুষকে কোনও কিছু জানানোর প্রয়োজন পড়লেই হালদার ইলেকট্রিক্‌সের শব্দযন্ত্র আর গোরাদার কণ্ঠ— ‘আনন্দ সংবাদ, আনন্দ সংবাদ, আনন্দ সংবাদ। আজ সন্ধ্যা ছয় ঘটিকায় কালীমাতা হাই ইস্কুল প্রাঙ্গণে বিশ্ব বিখ্যাত যাদুকর পি সি সরকারের যাদু প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হইবে এ-এ-এ....। টিকিটের মূল্য এক টাকা, দুই, টাকা পাঁচ টাকা। আগে এলে আগে পাবেন...’ রিক্সার চাকা গড়িয়ে যায়। কিংবা ঘোষণা থামিয়ে হ্যান্ডবিল বিলি করা হয়। হলুদ রঙের সেই হ্যান্ডবিল মানুষের হাতে ধরিয়ে দেওয়াও ছিল তার কাজ। শহরবাসীর চোখ এসব দেখতে অভ্যস্ত ছিল। সেই গোরাদা নেই! অথচ সেই সময়ে মানে সত্তরের দিনগুলো শহর আর গোরাদা পরিপূরক হয়ে উঠেছিল। ওই কণ্ঠের আকর্ষণে আমিও কেমন যেন আটকে যেতাম এই শহরে, গোরার সঙ্গে। তখন একটা স্কুলে মাস্টারির সূত্রে শহরে বাসা বেঁধেছি। ভাড়া বাড়ি। গ্রাম থেকে এসেছি শহরে। শহর ঠিক নয় আধা শহর। বাজার থেকে বড় রাস্তা ঢলে গেছে আমাদের ইস্কুলের দিকে। পথের পাশে ছিটেবেড়ার চায়ের দোকান। চায়ের গেলাসে চুমুক দিচ্ছি। এমন সময় একটা ভরাট কণ্ঠ এগিয়ে আসছে—‘আজ সন্ধ্যা আটটায় কলিকাতার বিখ্যাত যাত্রা কোম্পানি—নট্ট কোম্পানির যাত্রাপালা নটীই বিনোদিনী... নটী ই ই বিনোওদিনীই। শ্রেষ্ঠাংশে যাত্রারাণী বীণা দাশগুপ্ত...’ চাকা গড়িয়ে যায়। পাশ থেকে এক মাস্টারমশাই বললেন—চিনে রাখুন এ হলো আমাদের লোকাল দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়ে গেছে। ওই মুক্তিযুদ্ধের সুবাদে আকাশবাণী বাহিত দেবদুলালের কণ্ঠস্বর গ্রামবাংলার বাতাসে ছড়িয়ে গেছে। আধা মফঃস্বলী শহরের ভরাট কণ্ঠস্বরের অধিকারী ঘোষকও সেই পদ্মশ্রী প্রাপকের তুলনীয় হয়ে গেছে মানুষের কানে কানে। সারা বছর বিবিধ ঘোষণা চলতেই থাকে। কখনও দোকান উদ্বোধন, কখনও দোকানে দামের ছাড়! এছাড়া যাত্রা, থিয়েটার, ফাংশান, সার্কাস, এবং সিনেমা—হ্যাঁ সিনেমা। এলাকার একমাত্র সিনেমা হল ‘ছবিঘর’। প্রতি শুক্রুবার গোরাদা ঘোষণা করে সবাইকে জানিয়ে দেয় কী ছবি দেখানো হবে বা হচ্ছে। সিনেমা দেয়ার সময়। ছবিঘর সিনেমা হলে এলো নতুন ছবি রাজেশ খান্না—শর্মিলা অভিনীত ‘আরাধনা’ তিনটে, ছটা নটা .... তিনটে ... ছটা.... নটা আরাধনা... আরাধনা গোরাদা কাজ করে হালদার ইলেকট্রিক্সে। মিস্ত্রি। কালি মেখে আর স্ক্রু-ড্রাইভার আর প্লাস নিয়ে কাজ করতে করতেই গলা বেচে পাঁচ টাকা রেটে। সপ্তাহে তিনদিন কাজ বাঁধা। দিন গেলে দু-তিন ঘন্টা তো বটেই। সপ্তাহ পিছু তিরিশ-চল্লিশ টাকা বাড়তি আয়। ওটা গোরার। হালদারমশাই ভাগ নেন না। তার লাভ মেশিন ভাড়া। গোরা খুব আনন্দের সঙ্গেই কাজটা করে। ও জানে লোকে ওকে দেবদুলাল বলে ডাকে। কখনও গর্বে তার বুক ভরে যায়। আবার কখনও নিজের বুকে ঘুসি মারে—ধুস্‌ আমি দেবদুলাল হতে যাবো কেন—আমি গোরা—গোরা দাস। গৌরাঙ্গ দাস। পরক্ষণেই নিজেকে বলে, যে যা বলে বলুক, খিস্তি তো মারছে না। যাক গে তোরাও আনন্দ পা—আমিও দু-পয়সা রোজগার করি। কালিমাখা প্যান্টের পাছায় হাতমুছে আবার প্লাস তুলে নেয় হাতে। .............................................. হ্যালো... মাইক টেস্টিং হ্যালো ওয়ান-টু-থ্রি সমরেন্দ্র মণ্ডল ............................................... বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১ সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচ্ছদ : সুলিপ্ত মণ্ডল অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত মুদ্রিত মূল্য : ৭২০ টাকা সুপ্রকাশ

Post image
❤️ 1
Image
Suprokash
Suprokash
6/21/2025, 3:45:06 PM

"চিরি নদী পৃথিবীর এক প্রত্যন্তে”— এই বাক্য দিয়ে 'ছায়ার পাখি'র আখ্যান শুরু। পশ্চিমবঙ্গের এই প্রত্যন্ত অঞ্চল আসলে রাজ্যের যাবতীয় গ্রামাঞ্চলেরই রূপকল্প। একজন গ্রামীণ গায়ক তথা তত্ত্বান্বেষী সাগর ঘটনাচক্রে গভীর আকর্ষণে বাঁধা পড়ে যায় রাজেশ্বরী নামে একজন যুবতী স্ত্রীলোকের সঙ্গে। রাজেশ্বরী বিধবা কিন্তু এই মুহূর্তে তার গর্ভে বাড়ছে এক শিশু। রাজেশ্বরী এই শিশুর পিতা বিমলকে খুঁজতে রাস্তায় বেরিয়েছে। সাগর যে গ্রাম্য গানের দলটির সদস্য, তাদের প্রধান যুগি এবং যোগান, দলে আরো আছে রব্বা, যে সারিন্দা বাজায়। এরা সবাই মিলে রাজেশ্বরীকে পাহারা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে তার নিরাপদ প্রসবের অপেক্ষায়। তিরিশ বছরের কংগ্রেসি শাসনের অবসানে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে বামপন্থীরা। এই পরিবৃত্তিকালের এক নির্ভরযোগ্য চিত্রের আড়ালে বিচিত্র একটি মানবিক আখ্যান যা লেখকের মরমী জীবনবোধে দীপ্য। ............................... ছায়ার পাখি অভিজিৎ সেন ................................ প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ৩৯০ টাকা সুপ্রকাশ

Post image
❤️ 1
Image
Suprokash
Suprokash
6/20/2025, 4:06:50 PM

এমন দুপুরে বুড়োরা ঘরে ঢুকে থাকে আর তরুণেরা কাজে। সেজন্য ছোটো শহর নিস্তরঙ্গ হয়। কিন্তু, তা বলে মরে যায় কি? সেন্ট জন'স-এর মাথা ঘিরে বিচিত্র আকৃতিতে কাকের দলের ঘুরপাক। জঙ্গলে কাঠপোকার কিড়কিড় বাদে অন্য শব্দ আমি পাচ্ছি না। জায়গাটায় জিপিএস কাজ করছে না, তাই দরজাবন্ধ চার্চের সামনে দাঁড়িয়ে আমি এদিক-ওদিক তাকালাম। 'গোটা টাউনে ভূতেরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো রাজ বসিয়েছে। এখানে আমরা কয়েক জন বাদে কেউ বেঁচে নেই। তুমি যাকে ভাববে বেঁচে, সে মরে আছে। আর যাকে মরা ভাববে, সে আসলে জ্যান্ত।' যাবার আগে দীপিকা বলেছিল আমাকে। আরও জানিয়েছিল একদিন জাদুবলে জঙ্গল ও পোড়োবাড়িদের দল উধাও হয়ে সেখানে মাথা তুলবে রিসর্ট, সুইমিং পুল, স্পা সেন্টার। 'ওই যে দেখছ চার্চ, ওটাই সেন্ট জন'স। রবিবার করে লোকজন আসে, কিন্তু বাকি সময়ে থমথমে। রাজ্যের সাপখোপের আড্ডা ওর অলটারের নীচে। আর আমার নাম দীপিকা সরেন।' আলগোছে, যেন অবহেলায় কাঁধ থেকে ঝাঁকিয়ে ফেলছে সে, যেভাবে অগ্রাহ্য করে এলোমেলো চুলের অবাঞ্ছিত ঝামরানো, জানিয়েছিল আমাকে। 'মনে রাখবে, এখন যতই গরম লাগুক, বিকেল থেকে কীভাবে তোমার হাড়ের ভেতর হিম ঢুকে যায়।' তবু আমার মনে হল সবাই আছে এখানে, জানালার ফাঁক দিয়ে আমাকে দেখছে। আমি দেখলাম সাদা ড্রেস পরা মেয়েটাকে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসতে। সামনের একটা দাঁত ভাঙা ছিল তার। মাথায় বুনোফুলের মালাকে মুকুটের মতো পরেছে দেখে আমার মনে দুম করে শব্দবন্ধ এল—জিপসিদের রাজকন্যা। অবশ্য, রাজকন্যা হবার বয়েস তার গেছে। তাকে আমি স্যাংচুয়ারির কথা জিজ্ঞাসা করলাম। সে নাক খুঁটে হলুদ শিকনি হাতে মন দিয়ে দেখল, তারপর বাঁ-দিকে হাত তুললে চোখে পড়ল দূরে ঝোপঝাড়ের আড়ালে ঢাকা পড়া সাইনবোর্ডে 'ctuary'। তারপর মেয়েটা দুদ্দাড় চার্চের পেছনে ছুটে গেল, যেদিকে ফলসা আর আমলকীর দঙ্গল জড়িয়ে-মড়িয়ে আচ্ছন্ন রেখেছে। পাশের কটেজের জানালার ভাঙা শার্সি বেয়ে একটা আদারং বেড়াল বেরিয়ে আমার দিকে রাগী চোখে তাকাল, মাটিতে নাক ঘষল দুইবার। তারপর দৌড়োল জিপসি রাজকন্যার পেছনে। আমি এগিয়ে গেলাম কারণ এমন নৈঃশব্দ্যে অভ্যস্ত নই। স্যাংচুয়ারির ভাঙা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম সামনের আগাছা ভরতি বাগানে চাপ চাপ অন্ধকার ইতিমধ্যে বাসা বেঁধেছে। তাদের পেছনে যে বিশালাকৃতির দোতলা বাড়ি, সেটার দরজা-জানালাগুলো বন্ধ। গা বেয়ে উঠে যাওয়া ঘোরানো সিঁড়ির অর্ধেকটা ভেঙে ঝুলছে। বাড়ির শরীরে গজিয়েছে নিঃশব্দ ছত্রাক। পাঁচিলের গায়ে ঠেস দিয়ে একটা পুরোনো অলটো বিশ্রাম নিচ্ছে। কাকের বিষ্ঠা ও শুকনো পাতার ভিড়ে মলিন তার ছাদ। গেটের উলটোদিকের কাঁঠালগাছ থেকে কাপড়ে বানানো দুটো পুতুল ঝুলছে। ওদের নাক, চোখ কালি দিয়ে আঁকা। চোখে পড়ল, বাড়ির ডান দিকের অংশটা ভাঙা হয়েছে। সেই ভগ্নস্তূপে এখনও অবশ্য সটান দাঁড়িয়ে রয়েছে দুটো থাম, তাদের মাথায় একফালি ছাদ। ফ্রেঞ্চ উইন্ডোর ভাঙা কাচ দিয়ে ভেতরের লাউঞ্জের অন্ধকার চোখে পড়ল। বাড়ি থেকে প্রেশার কুকারের সিটি ভেসে এল যখন, বুঝলাম ভেতরে লোক আছে। বাগানের দোলনাও অবশ্য অক্ষত। সেখানে এক বৃদ্ধা বসে ছিলেন। তাঁর পায়ের কাছে কুচকুচে কালো ছাগল, পরে নাম জেনেছি লালুরাম। ছাগলের চোখগুলো কুচফলের মতো লাল। বৃদ্ধা মোটাসোটা চশমা পরা। একটা কটকি শাড়ি পরে দোল খাচ্ছিলেন। এবার হাত তুলে বললেন, 'এসো।' আর আমি স্যাংচুয়ারির পেটে ঢুকে গেলাম। . . . নৈশ অপেরা শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ৫৪০ টাকা সুপ্রকাশ

Post image
❤️ 1
Image
Suprokash
Suprokash
6/20/2025, 3:42:23 AM

বাংলার জমিদার, মহারাজা বা উচ্চবিত্ত বাঙালি শিকারীরা, যখনই শিকার স্মৃতি লিখতে বসেছেন, অরণ্যের সৌন্দর্য থেকে কেউ কিন্তু মুখ ফিরিয়ে থাকেননি। অরণ্যমধ্যে পরিত্যক্ত বাসভূমি সূর্যকান্ত আচার্যর হৃদয় আর্দ্র করেছে। ময়ূরভঞ্জের বর্ষার রূপ মুগ্ধ করেছে অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায়কে। অরণ্যের রূপ-রস-গন্ধকে না চিনলে হয়ত শিকারী হওয়া যায় না। অথচ, বন্যপ্রাণ—যা, অরণ্যেরই অংশ স্বরূপ, তা নিধনের পর এদের বিজয়-উল্লাস বড় পীড়াদায়ক। এমন মনস্তাত্ত্বিক বৈপরীত্য সম্ভব! এ কি, শিক্ষিত তথাকথিত সংস্কৃতিবান বাঙালির চারিত্রিক দ্বিচারিতা? এ স্মৃতি-মালা বিগত যুগের মুষ্টিমেয় বাঙালির শৌর্য, বীরত্বের গৌরবগাথার নাকি, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ বিনাশের আঁধার ইতিহাসে বাঙালির লজ্জাজনক আখ্যান এবং একই সঙ্গে এক উৎকেন্দ্রিক দেশীয় অভিজাত শ্রেণীর স্বরূপ উন্মোচনের উপাদান, তা সমাজ-ইতিহাসে মনোযোগী পাঠক অনায়াসেই বুঝতে পারবেন। . . . বাঙালির শিকার স্মৃতি সম্পাদনা : গৌরব বিশ্বাস প্রচ্ছদ ও অলংকরণ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ৫৪০ টাকা সুপ্রকাশ

Post image
❤️ 1
Image
Suprokash
Suprokash
6/15/2025, 2:26:48 PM

অক্ষর-চরিত্র ও জ্ঞাপন-বাণিজ্য : এক অন্তহীন এপিটাফ। পর্ব ১৭। অনন্ত জানা সম্পূর্ণ পড়ার লিঙ্ক : https://nirmukhosh.in/lekhalekhirshilpi17/

Suprokash
Suprokash
6/15/2025, 2:17:15 PM

সময় ভ্রমণে দার্জিলিঙ : পাহাড় ও সমতল। পর্ব ৪৩। লিখছেন সৌমিত্র ঘোষ সম্পূর্ণ পড়ার লিঙ্ক : https://nirmukhosh.in/samaubhraman43/

Suprokash
Suprokash
6/15/2025, 2:16:58 PM

অকূলের কাল। পর্ব ১৭। লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী সম্পূর্ণ পড়ার লিঙ্ক : https://nirmukhosh.in/akulerkal17/

Suprokash
Suprokash
6/15/2025, 2:30:41 PM

সৌভাগ্যশলাকা। ধারাবাহিক উপন্যাস। পর্ব ১৭। লিখছেন অলোক সান্যাল সম্পূর্ণ পড়ার লিঙ্ক : https://nirmukhosh.in/souvaggosholaka17/

Suprokash
Suprokash
6/15/2025, 10:42:16 AM

খালারি স্টেশনের পাশ দিয়ে বেঁকে যাওয়া রাস্তা ছয় কিলোমিটার অতিক্রান্ত হবে যখন, গঞ্জে ঢোকার মিনিট পাঁচেক আগে রাস্তার ডান পাশ দিয়ে একটা টিলা উঠে যেতে দেখা যাবে। তার অন্যদিকের গা বেয়ে জঙ্গল ভরতি খাদ। এই জায়গায় ঢেউ খেলানো পথ বাঁ-দিকে একটা বাঁক নিয়েছে। অঞ্চলটাকে মন দিয়ে লক্ষ করা দরকার। লোকে বলে, এখানে পাহাড়ি ভূতের দল বাসা বেঁধে আছে অনেকদিন হয়ে গেল। সেই যেদিন থেকে রেভারেন্ড ওয়েসলি গঞ্জে প্রথম মিশনারি স্কুল তৈরি করেছিলেন, তা সে আজ থেকে প্রায় নব্বই বছর আগের কথা, অথবা, তারও আগে হতে পারে, যেহেতু মানুষ ভুলে গেছে। রাত্রিবেলা সেসব ভূতের ফুটিফাটা আত্মার গহ্বর থেকে বেরোনো সাঁই সাঁই গাঢ় নিশ্বাসকে আশপাশের মুন্ডা ওরাওঁ গ্রামগুলোর অভুক্ত কাঠকয়লা চোরের হাঁপানি হিসেবে ভুল করার কারণ দেখেনি কেউ। একপাশে আধভাঙা বেথেল মিশন চার্চ ভূতের গল্পে সারজল জুগিয়েছে। অন্ধকারে ফিসফিসানি, চাপাগলায় অট্টহাসি, অথবা, অকস্মাৎ ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজ সবাই পেত সেখানে। দিনের বেলা জায়গাটা সাফসুতরো থাকত। আদিবাসী রমণীরা খোলা জায়গায় বসে রোদ পোয়াত। আচার শুকোতে দেওয়া হত পাথরের গায়ে। কিছুদূর দিয়ে বয়ে গেছে একটা পাহাড়ি ঝোরা। তার জলে নিঃসংকোচে স্নান করার সময়ে পথচলতি টুরিস্টের হাঁ চোখকে নির্লিপ্ত অবহেলায় ঝরিয়ে দেওয়া যায়। শিশুরা ধুলো, পাথর অথবা বল নিয়ে অক্লেশে লাফালাফি করে, লুকোচুরি খেলে চার্চের ভেতর। মায়েরা অলস চোখে তাকায়। মাঝে মাঝে গলা উঁচু করে ধমক দিলেও তার ভেতর নিষেধ ছিল না। পাথুরে চ্যাটালো চত্বর, তাকে ঘিরে শাল, সেগুন, পিয়ালের পুঞ্জ আর অবিরল সূর্যোদয় নিশ্চিন্তির ঊষ্ণতা দেয়। অনতিদূরে গঞ্জের প্রান্তভাগ তাকে স্তিমিত করতে পারবে না। এখানে দুপুর বেলা আসে কিশোরীর দল। তারা বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে থাকা বান্ধবীরা, যারা মিলনস্থল হিসেবে জায়গাটাকে বেছে নিয়েছে। ছোটো থেকে তারা এই স্থানকে 'জোহার হালে' বলে জানে। শব্দটা মুন্ডারি, যদিও এই মুহূর্তে এখানে, শুধু এই মুহূর্তে কেন, যেদিন থেকে কোল বিদ্রোহে অংশ নেওয়া মানকি মুন্ডাদের নির্মমভাবে দমন করেছিল ব্রিটিশ সরকার, সেদিন থেকে সমগ্র ছোটোনাগপুর জুড়ে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক আধিপত্য কমছে। তবু সংস্কৃতি মাথা নোয়ায় না। ফলত, তাকে নিরুপায় হয়ে মেনে নিয়েছে রাজতন্ত্র, তার পরের রাতু মহারাজরা, তার পরের অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা, তারও পরের বাঙালি-হিন্দি পাঁচমিশেলি উপনিবেশ ও তারও পরের, পরের ও পরের—শব্দের মৃত্যু নেই। অন্য যে নামে ডাকো না কেন, নাছোড় স্মৃতি তবু 'জোহার হালে' নামেই জায়গাটাকে চিনবে। 'জোহার হালে' মানে, দু-জন মানুষ মুখোমুখি দেখা হলে যেভাবে একে অপরকে অভ্যর্থনা জানায়। যেমন, ইংরেজিতে 'হ্যালো'। কিশোরীরা এখানে আসে নিজেদের রহস্যময় কাহিনিগুলোর ভাগবাঁটোয়ারা করতে। কোন তরুণকে তাদের ভালো লেগেছিল অথবা নিভৃত চুমুর বিনিময়ে কে দিল হৃদয়প্রস্তাব, সেই সমস্তকে শোনে পাথুরে শ্যাওলা, ঝরনা, শালবন। . . . নৈশ অপেরা শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ৫৪০ টাকা সুপ্রকাশ আসছে...

Post image
❤️ 3
Image
Suprokash
Suprokash
6/14/2025, 3:58:59 PM

এই বিশাল ভুবনের এক অন্ধকার কোণে এক অখ্যাত গ্রাম। অনেক দূরের এক নিঝুম মাঠে পড়ে থাকা তার খড়ো চালের পাঠশালা, পাঠশালার পণ্ডিত আর পড়ুয়া, পণ্ডিতের রুলবাড়ি কিংবা দিয়াশলাই, পড়ুয়াদের বইদপ্তর; গাঁয়ের ছোটখাটো সব মানুষ, চিতু ওনা লুড়কা লেউল জগা ওন্তা বুড়া মথুর বদনা সত্য পদি কালীমতি উরা, তাদের সঙ্গী ঘোড়া-কুকুর-ইঁদুর-সাপ; তার গাছ আর ফল, আম-জাম-তাল-মোল; তার দুগ্‌গা আর ভাদু পূজা, যাত্রাপালা, তার বকুল গাছের ছায়ায় রামমন্দিরের শীতল চাতাল; তার শিলাই নদীর দ’ আর খালের বাঁধ— এই সবকিছু নিয়েই ‘এক যে ছিল গ্রাম’। ............................................. এক যে ছিল গ্রাম অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী ............................................. প্রচ্ছদ : সুলিপ্ত মণ্ডল অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা সুপ্রকাশ

Post image
❤️ 1
Image
Link copied to clipboard!