
ED-Engineer's Diary
May 15, 2025 at 06:17 PM
ব্যাংকিং খাত নিয়ে কাজ হচ্ছে। সর্বোচ্চ এফোর্ট দেওয়া হচ্ছে। নানান উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কিন্ত ব্যাংকিং খাতের জন্য নেওয়া এসব উদ্যোগ কতো টুকু কাজ করবে তা বলা যাচ্ছে না।
হাসিনা যাবার আগে ব্যাংকিং খাত রীতিমতো ছোবড়া বানিয়ে দিয়ে গেছে। আপাতত জাস্ট ইমিডিয়েট পতন ঠেকানো গেছে৷ কিন্ত রিকভারি বহু দূর।
আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি হাসিনা ২০২৫ সার্ভাইভ করতে পারতো না। ইকোনোমি ওকে ফেলে দিতো।
এখনো ইকোনোমির অবস্থা যথেষ্ট খারাপ।
এই খারাপের ইম্পাক্ট সামনে টের পাবেন।
_______
ক্যারিয়ারের লম্বা একটা সময় ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করেছি। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে শুরু করে প্রাইভেট ব্যাংক...সব জায়গাতেই বন্ধু-বান্ধব আছে।
সবার চোখে মুখে দুশ্চিন্তা দেখি। সবার চোখে উদ্বেগ।
আলাপ করতে গেলে হতাশা।
এস আলম গ্রুপের ব্যাংক গুলোকে কোন ভাবে টেকানো যায় কি না সেই চেষ্টা সবার। শেষ পর্যন্ত কি হবে জানি না।
__________
বাংলাদেশের শিক্ষিত ছেলেদের কর্মসংস্থানের একটা বড় সোর্স ছিলো ব্যাংক।প্রাইভেট ব্যাংক গুলো প্রতিবছরই প্রবেশনারি অফিসার বা ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসারে প্রচুর শিক্ষিত গ্রাজুয়েট নিতো। সংখ্যাটা কমে আসছে।
অনেক ব্যাংকে ইনক্রিমেন্ট নাই। শিক্ষিত মিডেল ক্লাসের একটা বড় অংশ তো এরাই।
________
দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেয়ার বাজার নিয়ে সেরকম কোন উদ্যোগ নেই।
পুজি বাজারে টানা দড়পতন ঘটছে।
পৃথিবীর উন্নত দেশে ব্যবসার পুজি আসে বন্ড/শেয়ার থেকে। আমাদের এখানে আসে লোন থেকে।
শেয়ার মার্কেট এমনিতেই দুর্বল। কিন্ত এখন এক বারে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আজ ১৫ই মে শেয়ার নিউজ রিপোর্ট করেছে: "শেয়ারবাজারে মহাদুর্যোগ, পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক"
__________
গত মাস দেড়েক ধরে প্রতিদিনই শেয়ার ব্যবসায়ীরা কান্না-কাটি করছেন।বিক্ষোভ করছেন।
কিন্ত জানি না কেন...তাদের কান্না কোন মিডিয়াতে লাইভ সম্প্রচার হয়নি।
________
অর্থনীতির প্রতিটা ইন্ডিকেটর সিগন্যাল দিচ্ছে...অবস্থা ভালো না।
আমদানি বন্ধ করে রিজার্ভ ধরে রাখছি.. এখন চাপ পরছে উৎপাদন কার্যে। দেশীয় উৎপাদন বিশাল ধাক্কা খেয়েছে।
দেশের ইকোনোমি রিড করার ভালো একটা ইন্ডিকেটর হচ্ছে ঋণ প্রবৃদ্ধি। মানে ব্যবসায়ীরা তো ঋণ নিয়েই ব্যবসা করে।
গত ২১ বছরের মাঝে ঋণ প্রবৃদ্ধি মানে ঋণের গ্রোথ সবচেয়ে কম। মানে লোকাল ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করছে না।
কম বিনিয়োগ মানে কম ব্যবসা। কম ব্যবসা মানে কম কর্মসংস্থান।
এই লাখ লাখ বেকার তরুণকে নিয়ে আমরা কোথায় যাবো?
_________
দেশী ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করছে না। বিদেশী ব্যবসায়ীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিশ্বাস করছে না।
নির্বাচন ছাড়া বিনিয়োগ আসবে না।
এই কথাটা বললেই আমরা হয়ে যাই ১৭ বছরের ক্ষুধার্ত দলের দালাল।
অথচ অর্থনীতির প্রতিটা ইন্ডিকেটর নেগেটিভ।
_________
সেই ২০১৮ সাল থেকে মানি লন্ডারিং নিয়ে কথা বলে আসছি। তখন যখন বলতাম ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থা ভালো না...যেকোন সময় ধ্বসে পরবে...বন্ধু-বান্ধব হাসতো।
হাসি-ঠাট্টা করতো।
ফেসবুকে পোস্ট দিলে বড় বড় তালেবররা এংরেজি শব্দে মাইক্রো-ম্যাক্রো ইকোনিমক্স এর টার্ম গুলিয়ে বুঝাতে বসতো...কেন ভয়ের কোন কারণ নেই। কেন এসব প্রপাগান্ডা। কেন হাসিনামিক্স টিকে যাবে।
______
পাগল পাগল লাগতো। চোখের সামনে মাতৃভূমি লুট হতে দেখছি...সাবধান করতেছি...কেউ শুনতেছে না।
সেই সাবধান বাণী মিলে গেছে। সেই সময় যে বন্ধুরা হাসি-ঠাট্টা করতো...তারা এখন আর হাসে না।
যদিও নিজেরা যে ভুল ছিলো সেটাও মানতে চায় না।
আমার হিসাব মিলে গেছে। প্রেডিকশন মিলে গেছে।
কিন্ত...বিশ্বাস করেন...
এটা মিলে না গেলে আমার চেয়ে খুশি বোধহয় কেউ হতো না।
_________
সামনের জন্য বলে যাই:
সামনের সময়টা কঠিন।প্রস্তুতি নেওয়া ভালো।
অর্থনীতির অবস্থা জঘন্য। যতো সময় যাবে..ততো টের পাবেন।
ছাটাই হতে পারে অনেক প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠান গুলোকেও তো সার্ভাইভ করতে হবে।
তাই না।
আর স্বাধীনতা? সার্বভৌমত্ব?
জাতীর পতাকা খামছে ধরেছে নতুন শকুন।
________
জানি। হাসবেন।
কিন্ত এটাও মিলে যাবে।
না মিললে আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হবে না।
কিন্ত প্রেডিক্ট করছি আর মিলে নাই...এরকম ঘটনা খুব বেশি নাই।
_ M Hassan
😢
1