১৯০৮ সালের ৩০ জুন, ভোরবেলা, রাশিয়ার সাইবেরিয়ার টুংস্কা নদীর উপরে ঘটে এক ভয়ংকর বিস্ফোরণ। এটি এতই শক্তিশালী ছিল যে: প্রায় ৮০ মিলিয়ন গাছ উপড়ে পড়ে ২০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে। বিস্ফোরণের আলো ৫০০ কিমি দূর থেকেও দেখা গিয়েছিল। শব্দ ১০০০ কিমি দূর পর্যন্ত শোনা গিয়েছিল। শক্তি ছিল প্রায় ১৫–২০ মেগাটন TNT সমান – হিরোশিমার বোমার চেয়ে ১০০০ গুণ বেশি! কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার? এই বিপুল বিস্ফোরণের কোনও গর্ত বা ক্র্যাটার ছিল না! কোনও বড় ধাতব বস্তু বা উল্কা পাওয়া যায়নি। এ থেকেই জন্ম নেয় শত বছরের রহস্য… তত্ত্ব ১: UFO বা ভিনগ্রহের যান বিস্ফোরণ অনেক গবেষক মনে করেন, এটি ছিল একটি এলিয়েন UFO যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে বিস্ফোরিত হয়। কারণ: ঘটনাস্থলে অদ্ভুত ধাতব কণা পাওয়া যায়, যা পৃথিবীতে খুব বিরল। বায়ুমণ্ডলে হঠাৎ করে এত বড় শক্তির মুক্তি ঘটার কোনও স্বাভাবিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তত্ত্ব ২: নিকোলা টেসলার "ডেথ রে" অস্ত্র কিছু ষড়যন্ত্রতত্ত্ব অনুসারে, বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা তার বিদ্যুৎভিত্তিক অস্ত্র "ডেথ রে" নিউইয়র্ক থেকে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, যেটা ভুলবশত সাইবেরিয়ায় আঘাত করে এই বিস্ফোরণ ঘটায়। তত্ত্ব ৩: কমেট বা গ্রহাণু বাতাসে ফেটে যায় বিজ্ঞানীরা আজও মনে করেন, এটি একটি এয়ারবার্স্ট বা বায়ুমণ্ডলে ফেটে যাওয়া গ্রহাণুর ফল। বস্তুর ব্যাস ছিল হয়তো ৫০-৬০ মিটার, এবং এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে উচ্চতায় বিস্ফোরিত হয়, ফলে কোনও গর্ত তৈরি হয়নি। তবুও প্রশ্ন রয়ে যায়... কেন এমন ধাতব উপাদান পাওয়া গেল যেগুলোর বৈশিষ্ট্য অজানা? বিস্ফোরণের পর এত বছর পার হলেও কেন নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল না? যদি UFO হয়, তাহলে সরকার বা কোনো সংস্থা কি তথ্য গোপন করেছে? টুংস্কা বিস্ফোরণ আজও রহস্যে ঘেরা এক মহাজাগতিক ধাঁধা। এটি কি প্রকৃতির এক অনাকাঙ্ক্ষিত উল্কাবাহিত ধ্বংস? না কি সত্যিই এটা ছিল এলিয়েনদের এক গোপন বার্তা?