
ED-Engineer's Diary
June 12, 2025 at 06:19 AM
মানুষ আইন মানে দুইটা কারণে
১। সম্মান করে।
২। ভয় করে।
বাংলাদেশে সম্মান করে আইন মানার চর্চা কোনদিনই ছিলো না। আপনি দেখবেন কাজিনদের মাঝে / বন্ধুদের মাঝে সেই ছেলেটাকেই চাল্লু মানা হয়...যে যে কোন জায়গায় গিয়ে আইন না মেনে / লাইন না ধরে শর্টকার্ট বের করে ফেলে।
এইটা আমাদের নিজেদের মনস্তত্ব।
এখন আসেন ভয়ের বিষয়ে।
__________
আপনারা যদি মাঝ রাতের পর ঢাকার রাস্তায় বের হন...তাইলে একটা অদ্ভুত জিনিস দেখবেন। আর্মি এবং পুলিশ যে চেকপোস্ট গুলা করে সেখানে বাইকে কিংবা গাড়িতে ইয়াং ছেলে-পেলে দেখলে সাইডে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর জিজ্ঞাসা করা হয় এতো রাত্রে বের হবার কারণ কি। উত্তর পছন্দ না হলে রুকু পজিশনে নিয়ে গিয়ে পাছায় তড়াক তড়াক করে বাড়ি মারা হয়।
এই সময় পুলিশ সদস্যরা নিরাপদ দূরত্বে থাকে। উলটা দিকে মুখ করে থাকে। দেখেও না দেখার ভান করে।
তারা এই পিটুনিতে যোগ ও দেয় না। এগুলা আটকাইতেও যায় না।
কারণ তারা জানে এগুলা থেকে তাদের দ্বায়মুক্তি নাই৷
কিন্ত আর্মির আছে।
________
অতি সম্প্রতি ঢাকার কোন একটা থানায় সেনা হেফাজতে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী মারা যাবার ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় কোন মামলা হয় নাই। এখন ওই শীর্ষ সন্ত্রাসী মারা যাবার পর এলাকা আসলেই অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেছে।
এই যে জরুরি মুহূর্তে সেনাবাহিনী নামাইয়া দেয় রাস্তায়...আর পাব্লিক সুন্দর মতো সব আইন মেনে চলে...
এইটা কি সেনাবাহিনীর প্রতি সম্মান থেকে?
না ভয় থেকে?
_________
৫ তারিখের পর মানুষের মন থেকে পুলিশের প্রতি ভয় একদম নাই হয়ে গেছে। আজকেও নিউজ দেখতেছিলাম...খুব সম্ভবত মুন্সিগঞ্জে একটা থানা ঘেরাও করছে লোকাল লোকজন। কারণ তাদের এক আত্মীয়কে পুলিশ এরেস্ট করে নিয়ে আসছে।
ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় ( সব জায়গায় না) পুলিশকে মুভ করতে হইতেছে বিএনপি/জামাত/ ছাত্রদের প্রটেকশনে।
পুলিশের যদি একবার মনে হয় এই জায়গায় গেলে মাইর খাবার সমূহ চান্স আছে...আপনি তারে গুলি করেও ওই জায়গায় নিতে পারবেন না।
যার ফলে লোকাল পলিটিশিয়ানদের উপর পুলিশের ডিপেন্ডেন্সি জন্মাচ্ছে।
________
এখন মনে করেন কুমিল্লা - ৩ আসন। এই খানে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন জন। গ্রুপ ছয়টা।
স্বাভাবিক সময়ে যেটা হয়...পুলিশ এমপি'র/সাংসদের গ্রুপ টাকে হালকা-পাতলা পাত্তা দিলেই চলে।
পুলিশ আগে যেটা করতো...এই গ্রুপিং টাকে এক্সপ্লোয়েট করতো। এক গ্রুপকে আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে ইউজ করে এলাকা শান্ত রাখতো। আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশ এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছিলো।
কিন্ত এখন তো এমপি নাই। পুলিশ কার কথা শুনবে? কারে সাইজ দিবে?
এজন্য পুলিশ যেটা করে সব গ্রুপের সাথে তাল মিলায়। মারামারি করতে দেয়। মারামারি হবার পর মার্ডার হইলে একটু গাঁই-গুঁই করে নড়াচড়া করে।
_______
বিশ্বাস করেন....আমারে দুইডা গালি দেন...কিন্ত ইলেকশনের আগ পর্যন্ত পুলিশ এই স্টাইলেই কাজ করবে।
কারণ পুলিশ সংস্কার প্রস্তাব যখন রাজনৈতিক দল গুলার কাছে আলোচনার জন্য পাঠানো হয় নাই...তখনই তারা বুঝে গেছে এই পলিটিশিয়া আর আমলাদের আন্ডারেই তাদের থাকতে হবে। পুলিশ কমিশন আর হবে না।
তাই পুরা বাহিনী এখন ডিফেন্সিভ পজিশনে চলে গেছে। যেহেতু পলিটিশিয়ানদের আন্ডারেই থাকতে হবে...তাদের সাথে কাইজ্জা কইরে লাভ কি?
আপনি তাদের পাছায় দুইটা গুলি করলেও তাদের নড়াইতে পারবেন না।
__________
ফেইলিওরটা হচ্ছে পুলিশের আস্থা সরকার অর্জন করতে পারে নাই। কেন পারে নাই?
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সিংগাপুর চলে গেলো। এই ঘটনার চার জন পুলিশকে সাসপেন্ড করা হইলো। কোন কারণ ছাড়া৷ যেখানে আব্দুল হামিদকে যে দেশ ছাড়তে দেওয়া হবে...এই ডিসিশন ছিলো ইউনুস সাবের।
এরকম অসংখ্য ঘটনা ঘটতেছে যেখানে পুলিশ সদস্যদের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে। ওই খানে হয়তো তার করার কিছুই ছিলো না।
আবার পুলিশ দেখতেছে পুলিশ বাহিনী সংস্কার হবার কোন চান্স ও নাই। পুলিশ কমিশন গঠনের আলাপ জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের এজেন্ডাতেই নাই।
_____
ব্রিগ্রেডিয়ার সাখওয়াত হোসেন যখন উলটা-পালটা বকলেন...তখন আমিও উনাকে সরায় দেবার দাবি তুলছিলাম।
কিন্ত এখন মনে হচ্ছে...ব্রিগ্রেডিয়ার সাহেব অন্তত ডায়পার জাহাংগীরের চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ ভালো করতেন।
জাহাংগীর জাস্ট ফেইল্ড আস মিজারেবলি।
_________
এই বার একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় বলি।
তৃণমূল পর্যায়ে রাজনৈতিক দল গুলার অনেক কর্মীই নির্বাচন চায় না।
জামাত নির্বাচন চায় না সেটা বোধগম্য। এই সময় তারা যে দাপট দেখাইতে পারতেছে জন্মের পর থেকে তারা ওই দাপ্ট দেখাইতে পারতো না।
কিন্ত বিএনপি'র তৃণমূলের যে অংশ চাদাবাজির সাথে জড়িয়ে গেছে...এরাও নির্বাচন চায় না।
হিসাব সোজা।
ধরেন... আপনার এলাকায় তিনটা গ্রুপ চাদাবাজি করতেছে। ইলেকশন হয়ে গেলে বাকি দুই গ্রুপ অটো আউট হয়ে যাবে।
তারচেয়ে এখনকার সিস্টেমেই তারা খুশি।
বালুমহাল দখল, ইজারাদার... সব কিছুতেই একই সিস্টেম।
আপনারা যারা ইউটোপিয়াতে থাকেন...তারা বিষয় গুলা বুঝবেন না।
এই Thug Economy এর একটা আলাদা রুল আছে। অর্ডার আছে।
এই জিনিসটাও স্রেফ ভেংগে পরছে।
__________
আরেকটা বাস্তবতা হচ্ছে ৫ তারিখের পর থেকে দেশের অসংখ্য শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অসং্খ্য মানুষ বেকার হইছে।
এই বেকার লোকজন হয় ছিনতাই করবে। চুরি করবে।
অথবা রাজনৈতিক দল গুলার মাসল পাওয়ার হিসেবে কাজ করবে।
এই বেকারের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তেছে। প্রতিদিন ছাটাই চলতেছে।
প্রতিদিন রাস্তায় নতুন নতুন ক্ষুধার্ত - ডেস্পারেট মানুষ যোগ হচ্ছে।
_________
যতো দিন যাবে... পরিস্থিতি ততো খারাপ হবে।
সামনের ইলেকশন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ইলেকশন হলেও আমি অবাক হবো না।
অনেক আসনেই বিএনপি প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হাতে হারবে। ধরেন...বিএনপি একজন Thug নেতাকে বাদ দিয়ে একজন ক্লিন ইমেজের নেতাকে মনোনয়ন দিলো।
এখন Thug যে নেতা...সে স্বতন্ত্র দাঁড়াবে। তার টাকা আছে। তার মাসল পাওয়ার আছে। সে স্রেফ শক্তি দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে নিবে। সিল মারবে।
আপনি ৬ মাস পর ইলেকশন করলে Thug নেতাদের নির্বাচিত হবার যে সম্ভবনা... ২ বছর পর করলে...সেই সম্ভবনা আরো বাড়বে। তাদের শক্তি এই টাইমে আরো বাড়বে।
স্বয়ং তারেক রহমান আইসা...ইউনুস আইসা এক সাথে আইসা যদি বলে...তোমরা থামো...আপনি এই Thug দের আটকাইতে পারবেন না।
_________
১/১১ এর সময় আর্মি অনেক শক্ত ভাবে সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করতে পারছিলো...কারণ তখন পুলিশ ১০০% ফাংশনিং ছিলো। কিন্ত এখন সেই অবস্থা নাই।
আপনি আপনার পরিচিত যে কোন পুলিশ সদস্যের সাথে কথা বলেন। তারা সিম্পলি এই সরকারকে বিশ্বাস করে না। এই সরকারের জন্য রিস্ক নিলে যে এই সরকার তাকে ওন করবে...এইটা তারা বিলিভ করে না।
গত ১০ মাসে ইউনুস সরকার আইন-শৃংখলা রক্ষায় শোচনীয় ভাবে ফেইল করছে।
_________
তাইলে কি সিচুয়েশন এর উন্নতি করা সম্ভব না?
সম্ভব। কিন্ত সেই সম্ভাব্যতা খুব কম।
যেটা করতে হবে...দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
সিরাজগঞ্জে যারা কাছারিবাড়িতে আক্রমণ করছিলো...যে এলাকা থেকে আইসা...ওই এলাকায় মিনিমাম ২০০০/৩০০০ পুলিশ পাঠাইতে হবে। সাপ পেটানোর মতো পিটাইতে হবে৷ মাইর অবশ্যই হাটুর নিচে দিতে হবে।
যেখানেই মব হবে সেখানেই মাইরের রাস্তায় যাইতে হবে।
থানা ঘেরাও করলে সেটা যেই ঘেরাও করুক...সে বিএনপি নেতা হোক/ জামাত নেতা হোক আর নাপা নেতা হোক...একদম বাইন্ধা পেটাইতে হবে।
একই কাজ করতে হবে বিএনপির তৃণমূলের যে অংশটা চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে গেছে তাদের সাথেও।
আমার এই কথা কারো কারো পছন্দ হবে না।
কিন্ত এটা ছাড়া আর রাস্তা নাই।
___________
তবে এইটাও খুব সাময়িক সল্যুশন।।
থানা থেকে যে শত শত অস্ত্র লুট হইছে... সেই অস্ত্র এখন সন্ত্রাসীদের হাতে। খুলনা এবং চিটাগং এ এই অস্ত্র ব্যবহার হইছে মার্ডারে।
আর্মি উঠে গেলেই এগুলার ব্যবহার শুরু হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে এক সাথে এতো ফায়ার আর্মস কখনোই বাইরে ছিলো না।
___________
আপনি বিএনপিকে কইসা দুইটা গালি দিতে পারেন। বিএনপি গালি খাবার কাজ করছে। এইটা ট্রু।
কিন্ত....
ইউনুস সরকার ফেইল করছে।
সাথে আমরাও ফেইল করছি।
শোচনীয় ভাবে ফেইল করছি।
এটাই বাস্তব।
- M Hassan