
ED-Engineer's Diary
June 12, 2025 at 06:22 AM
পরিস্থিতি কতোটা খারাপ সেইটা বুঝতে তিনটা জিনিস সম্পর্কে আমাদের আইডিয়া নেওয়া দরকার :
১। Thuh Economy
২। Underground Economy
৩। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড।
প্রথমে আসেন Thug Economy এর বেলায়।বাংলাদেশের ক্ষেত্রে Thug Economy হচ্ছে মূলতো ভায়োলেন্স, চাঁদাবাজি, অবৈধ দোকান থেকে চাদা আদায়, বালুমহল ইজারাদার, বাজার/গরুর হাট দখলেই ইকোনোমি।
এখন আপনি নাক সিটকাইতে পারেন...কিন্ত এইটা কিন্ত বিশাল একটা ইকোনোমি। এবং এটা সব সময়ই পলিটিক্যাল পাওয়ার গুলার সাথে ইন্টারসেক্ট করছে। এবং এইটা টু সাম এক্সটেন্ডে দরকার ও।
ধরেন বনানি ফুটপাথ।
বনানিতে একটা দোকান সেটিং দিয়ে ব্যবসা চালাইতে কথার কথা ২ কোটি লাগলো। সে ওই দোকানে ব্রান্ডের কাপড় বেঁচে। এখন ওই দোকানের পাশের ফুটপাতে আরেকজন কাপড় নিয়ে বসলো। তার কোন দোকান নাই। এক কালীন খরচ নাই। কিসসু লাগতেছে না।
দিনে ৫০০ না... ১৫০০ টাকা দিলেও তার লস নাই।
এর বিনিময়ে সে কি চায়?
শেল্টার।
কার কাছ থেকে শেল্টার? কি শেল্টার?
সে চায় এই ফুটপাথে ৫ টার বেশি দোকান না থাকুক। কাপড়ে দোকান একটাই থাকুক। পুলিশ ডিস্টার্ব না করুক। সিটি কর্পোরেশন তুলে না দিক।
এই শেল্টারের বিপরীতে সে চাদা দেয়। আর এই শেল্টার দেয় লোকাল পলিটিক্যাল পার্টির লোকজন।
এবার আসেন আন্ডার ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিতে।
আন্ডার ওয়ার্ল্ড ইকোনোমি কি?
আন্ডার ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক এক্টিভিটিজ এর মাঝে ড্রাগ স্মাগলিং, গোল্ড চোরাচালান, থাগ ইকোনোমিক এক্টিভিটি, ঘুষ-দুর্নীতি এমনকি ইনফর্মাল ইকোনোমিও এইটার সাথে জড়িত।
এখন আপনি এইটাকে হেলাফেলা কইরেন না। আপনার একচুয়াল ইকোনোমির যে সাইজ...সেইটার থেকে আন্ডার ওয়ার্ল্ড ইকোনোমি ( এবং থাগ ইকোনোমি) এর সাইজ অনেক বড়। অনেক বেশি বড়।
আর ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড।
আপনার দেশের ওয়ার্কিং এজ পপুলেশন (১৫-৬৪) যখন নন-ওয়ার্কিং পপুলেশন এর চেয়ে বড় হয়...তখন ধরা হয় আপনার দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড উপভোগ করতেছে। এবং বাংলাদেশ এই মুহূর্ত্র ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর শেষ পর্যায়ে আছে।
এবার আসি রিস্কের হিসেবে।
_________
একটা দেশে যখন সিস্টেম ফেইল করে...তখন অল্টারনেটিভ সিস্টেম গড়ে উঠে।
৫ই অগাস্টের আগে বাংলাদেশে পুলিশ একটা রিপ্রেসিভ অর্গান ছিলো। এরা মানুষ খুন করতো। গুম করতো। চাঁদাবাজি করতো।
বাট তারা একটা সিস্টেম গড়ে তুলছিলো। যার ফলে Thug Economy তে একটা ব্যালেন্স ছিলো। ডিসিপ্লিন ছিলো। এক জায়গা থেকে চাঁদা একজনই তুলতো। তিনজন না।
সেই টাকার ভাগ প্রশাসনের সবাই পাইতো।
থাগ ইকোনোমির চাদার টাকা ঘুষে কনভার্ট হয়ে আন্ডার গ্রাউন্ড ইকোনোমিতে ঢুকে যাইতো।
আগে যেইটা হইতো... ৫ বছর পর পর সরকার চেঞ্জ হইতো। ফলে কারো পক্ষে খুব বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠা হইতো না। কেউ যদি শক্তিশালী হয়ে উঠতো...তাকে রাষ্ট্রই খাইয়া দিতো।
কিন্ত টানা ১৭ বছর থাকার ফলে লীগ একটা ডাইনোসরে পরিণত হয়। তার পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা।
এখন ৫ তারিখের আগে পুলিশ যে সিচুয়েশন কন্ট্রোল করতে পারছে...এইটার খুব অমানবিক একটা কারণ আছে।
________
র্যাব নিয়ে আমার লিখার একটা লিংক কমেন্টে শেয়ার করে দিব।
সেখানে আমি দেখাইছি বিএনপি আমলে কিভাবে ক্রস ফায়ার দিয়ে নির্বিচারে সন্ত্রাসী-চাদাবাজদের মারা হইছে। এবং এদের বেশির ভাগই ছিলো বিএনপি পন্থী। কারণ আওয়ামী লীগ পন্থী যারা ছিলো...তারা ছিলো বর্ডারের ওই পারে।
এখন এই ক্রসফায়ার পুলিশকে অসম্ভব ক্ষমতাশালী করে দেয়। বিএনপির সেই পাঁচ বছরে নিরীহ লোক মারা গেছে এরকম ক্রস ফায়ার মে বি হইছে তিনটা। যদি আমার ভুল না হয়।
কিন্ত আওয়ামী লীগ এসে এইটাকে পলিটিক্যাল রিপ্রেসনের একটা টুল বানাইয়া ফেলে। কাতারে কাতারে বিএনপি এবং জামাত এর নেতা-কর্মীদের ক্রস ফায়ার দিতে থাকে।
একই সাথে পুলিশকে ক্ষমতাশালী করা হয়।
পুলিশকে বলা হয় তুমি রিস্ক নাও। আমি আছি তোমার পেছনে।
_________
এখন ৫ তারিখের পর পুলিশ ফেইল করছে।
আগের পোস্টে দেখাইছি সরকার কিভাবে এবং কেন পুলিশের আস্থা অর্জন করতে পারে নাই৷ পুলিশ কমিশন গঠন এবং পুলিশ সংস্কারে সরকার কোন উদ্যোগই নেয় নাই। সো পুলিশ বুঝে গেছে তার পলিটিশিয়ান আর আমলাদের আন্ডারেই থাকতে হবে।
কিন্ত ভয়ের বিষয় যেটা:
এর ফলে প্যারালল সিস্টেম গড়ে উঠবে।
খুনের বিচার, ডাকাতির সমাধান, চুরি ঠেকানো, মেয়ে অপহরণ, রেপের বিচার এসবের বিচারের জন্য এবং প্রতিকারের জন্য পাব্লিক আর পুলিশের কাছে যাবে না।
তারা এই অল্টারনেট সিস্টেম এ নক করবে।
ঢাকার বাইরে ২০০১ এর আগেও অনেক জায়গায় অল্টারনেট সিস্টেম ছিলো। ইন্ডিয়াতেও ছিলো। পাকিস্তানে এখনো ফুল ফ্লেজে আছে।
বিএনপি আমলে ধুমাইয়া ক্রস ফায়ার দেবার ফলে এই সিস্টেম ধ্বসে পরে। কিন্ত এখন সম্ভবনা দেখা দিচ্ছে...এই সিস্টেম ব্যাক করার একটা বিশাল সম্ভবনা তৈরি হইছে।
আরেকটা ইস্যু হচ্ছে আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড।
বিপুল পরিমাণ বেকার জনগোষ্ঠী আমাদের আছে। এদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে না পারলে...এরা Thug Economy এবং আন্ডারগ্রাউন্ড ইকোনোমিতে জড়াইয়া যাবে। জংগীবাদে জড়াইয়া যাবে।
যার ফলে প্যারালল যে সিস্টেম গড়ে উঠবে...যে গ্যাং কালচার গড়ে উঠবে সেইটা সরকার থেকেও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
নিয়মিত ৫ বছর পর পর সরকার চেঞ্জের ফলে যেটা হইতো...এইটা হাতবদল হইতো। যার ফলে সরকারের চেয়ে কেউ শক্তিশালী কেউ হতে পারতো না।
_________
হাসিনার আমলে প্রতিটা ইন্সটিটিউশন নষ্ট হইছে।।করাপ্ট হইছে।
আমি তীব্র ভাবে সেনাবিরোধী লোক। সেই হাসিনা আমল থেকে আমি এদের "ক্যাশ প্রেমিক" ট্যাগ দিয়ে আসছি।
কিন্ত স্যাড হইলেও সত্য যে এই মুহূর্ত এক মাত্র ফাংশনাল বডি সেনাবাহিনীই আছে। বুকে পাথর চাপা দয়ে এই সত্য আমাকে মেনে নিতে হচ্ছে।
এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর ভিতরে গেঞ্জাম বা গোলমাল শুরু হইলেই সর্বনাশের চুড়ান্ত হয়ে যাবে।
এবং অনেকেই বিশ্বাস করেন সেনাবাহিনীর ভেতরে গেঞ্জাম লাগাবার একটা সক্রিয় চেষ্টা এর মাঝেই হইছে।
_________
বাংলাদেশের কিশোর গ্যাং, মব কালচার এবং চাঁদাবাজিকে তাই জাস্ট অসুখ হিসেবে দেখার সুযোগ নাই। এই গুলা সিমটম। অসুখ না।
দেয়ার ইজ আ ফেয়ার এমাউন্ট অফ চান্স....যদি পুলিশকে ফুল ফর্মে ব্যাক করানো না যায়...তাইলে আমরা একটা ফেইল্ড ইকোনোমি এবং স্টেটের দিকে হাটবো।
মায়ানমারের যুদ্ধ, ভারতের বিভিন্ন পার্টে উত্তেজনা...সেইটার জন্য একটা পার্ফেক্ট কন্ডিশন রেডি করে রাখছে।
ইউনুস সাহেব যদি আজাইরা ঘোরাঘুরি না করে অন্তত পুলিশ বাহিনীটাকে ঠিক করার চেষ্টা করতেন...তাইলে অন্তত একটা কাজের কাজ হইতো।
উনি এমন একটা সিচুয়েশন ক্রিয়েট করছেন...যেখানে মব তন্ত্র এবং থাগ কালচারের উত্থান ঘটছে।
_________
এখন আপাত সমাধান হচ্ছে...আমাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ব্রুট ফোর্স ইউজ করতে হবে।
এখানে কিছু মান বাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটবে। ঘটবেই। এটা এভয়েড করার সুযোগ নাই।
কিন্ত এটা ছাড়া উপায় নাই।
প্যারালল সিস্টেম গড়ে উঠা মানে লাতিন আমেরিকান কিংবা কিছু আফ্রিকান কান্ট্রির মতো গ্যাং কালচার। আর শ্যাডো গভ।
এইটা ঠেকাইতে হবে।
( এই পোস্ট ইমিডিয়েট আগের পোস্টের সাথে মিলাইয়া পড়লে ফুল সিনারিওটা পাবেন)
👍
1