ED-Engineer's Diary
                                
                            
                            
                    
                                
                                
                                June 12, 2025 at 08:59 PM
                               
                            
                        
                            বিশ্বের বড় বড় মিডিয়ায় প্রায়ই এই শিরোনামে সংবাদ আসে যে "সেমিকন্ডাক্টর চিপ নির্মাণে ভিয়েতনাম শক্তিশালী দেশ হিসাবে পরিণত হচ্ছে"! 
হ্যাঁ, এটি প্রমাণিত যে ভিয়েতনাম বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়ার পথে দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে। যদিও এখনো তারা তাইওয়ান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো "শক্তিশালী কেন্দ্র" হয়ে ওঠেনি, তবুও তাদের সম্ভাবনা ও অগ্রগতি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। 
২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ভিয়েতনামের সেমিকন্ডাক্টর বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটে—এই সময়কালে বাজারটি গড়ে ৭.১% হারে বেড়েছে। ২০২২ সালে এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় ১৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই প্রবৃদ্ধি ভিয়েতনামকে বৈশ্বিক চিপ শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনাময় দেশে পরিণত করেছে।
বর্তমানে দেশটিতে চিপ ডিজাইন খাতে ৪০ থেকে ৫০টির মতো কোম্পানি সক্রিয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করছে ৫,০০০-রও বেশি দক্ষ ডিজাইন প্রকৌশলী, যারা আধুনিক চিপ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের জন্য কাজ করছেন। এই শক্তিশালী মানবসম্পদ ও কারিগরি ভিত্তি ভবিষ্যতে ভিয়েতনামের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে, চিপ ডিজাইন ও উৎপাদন খাতে ভিয়েতনাম ধীরে ধীরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে, যা দেশটিকে আগামী দশকে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। 
এই যে গার্মেন্টস শিল্প থেকে বের হয়ে হাই-টেক প্রযুক্তিতে ভিয়েতনাম পা রাখলো এইটা কি পরিকল্পনা ছাড়াই হয়েছে? ২০১০ সাল থেকে ভিয়েতনাম শিক্ষায় তাদের জিডিপির ৪% বা তার বেশি বরাদ্দ দিয়ে আসছে। সেই সময় ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি ভালো ছিল না। তবুও তারা শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল। আর আমরা এই বছর শিক্ষায় বরাদ্দ দিলাম জিডিপির ১.৭%! কোথায় আশা করেছিলাম জিডিপির ৫% সেখানে ১.৭%! 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সেমিকন্ডাক্টর রিসার্চ সেন্টার আছে। অনেক বছর ধরে আছে। আমরা শিক্ষা ও গবেষণায় কোথায় আছি সেটা এই সেন্টারে একবার আসলেই বুঝতে পারবেন। আসার জন্য হাতে সময় নাই? সমস্যা নাই। এই সেন্টারের ওয়েবপেইজ একবার ঘুরে আসলেও বুঝতে পারবেন কতটা অবহেলিত আর কি তার দৈন্য দশা। আশা করা কি অন্যায় যে এই সেন্টারকেই বরং সেমিকন্ডাক্টর চিপ শিল্পে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। এই সেন্টারে থাকার কথা বাঘা বাঘা গবেষক, উন্নত অবকাঠামো, শক্তিশালী পিএইচডি ও পোস্ট-ডক প্রোগ্রাম। অথচ এর কিছুই নাই সেখানে। কেউ এইটা নিয়ে ভাবেও না। ভাববে কিভাবে? এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ব্যস্ত হয় রাজনীতি না হয় পার্ট টাইম অন্যত্র পড়ানো নিয়ে। এই দেশের সরকার শিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে বিন্দু মাত্র ভাবে না।  এমনকি বর্তমান ইন্টেরিম সরকারও না। এই দেশ তাহলে কিভাবে আগাবে? কিভাবে উন্নত হবে?
এমনি এমনিতো আর ইউনেস্কো শিক্ষায় জিডিপির ৫.৫% এর বেশি বরাদ্দ দিতে বলে না। আর আমাদের সরকার দেয় ১.৭%! ছিঃ!
- কামরুল হাসান মামুন