Al-Huda wa An-Noor
Al-Huda wa An-Noor
June 18, 2025 at 04:41 PM
বিসমিল্লাহ ইহুদি ও মুশরিকের (والذين أشركوا) লড়াই --- ১: আকল-বুদ্ধিবৃত্তি আল্লাহর নেয়ামত। আকলের সদ্ব্যবহার করতে পারা জীবনের অন্যতম সৌন্দর্য, শ্রেষ্ঠতম অর্জন, অনন্য যোগ্যতা। ২. আল্লাহ তার বান্দার মধ্যে নেয়ামতের প্রকাশ দেখতে ভালোবাসেন। আমি যদি আলকবুদ্ধিকে কাজে না লাগিয়ে অকেজো করে রাখি, তাহলে আমি ঐ ব্যক্তির মতো হয়ে গেলাম, যার কথা কুরআনে বলা হয়েছে, قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِینَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِیۤ أَخۡرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّیِّبَـٰتِ مِنَ ٱلرِّزۡقِۚ আল্লাহ নিজ বান্দাদের জন্য যে শোভার উপকরণ সৃষ্টি করেছেন, কে তা হারাম করেছে? এবং এমনিভাবে উৎকৃষ্ট জীবিকার বস্তুসমূহ? (আরাফ: ৩২)। ইবরত: আল্লাহর কসম, নিঃসন্দেহে এটা এক মহা অপরাধ। আল্লাহর হকের প্রতি চরম অবহেলা, নিজের প্রতিও চরম অবমাননা। হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ উভয়ের লঙ্ঘন। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা দুটি রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে। ক. ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইহুদিরাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে। খ. ১৯৭৯ সালে ইরানে শিয়ারাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে । আরো নিখুঁত করে বলতে গেলে প্রথমে ফ্রান্সের ‘নিয়াওফল লে শাটিউ (Neauphle-le-Château)-তে, তারপর রাষ্ট্রটিকে বিমান উড়িয়ে তেহরানে এনে প্রতিস্থাপন করেছে। যুগের দাজ্জাল লানাতুল্লাহ খোমেনির মাধ্যমে। ফরাসি বিমান খোমেনিকে তেহরানে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। খোমেনির সাথে পরামর্শক হিসেবে ছিল একদল ফরাসি গোয়েন্দা। খোমেনিকে যখন রেজাশাহ ইরান থেকে বহিষ্কার করেছিল, ইরাকে আশ্রয় নিয়েছিল। ইরাক থেকে বের হয়ে ফ্রান্সের উপরোক্ত শহরে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। খেয়াল করলে দেখব, ই/হুদি ও ‘আল্লাজিনা আশরাকু’ উভয় রাষ্ট্রই এতদাঞ্চলের মাটি ও মানুষের সাথে খাপ খায় না। ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি কোনো দিক দিয়েই রাষ্ট্রদুটি স্থানীয় আবহাওয়ার সাথে ঠিকঠাক মিশ খায় না। সুন্দর শরীরে বিষফোঁড়া যেমন, অনেকটা তাই। চারপাশে আরব বসতি, পাশেই ‘ইহুদি ও আল্লাজীনা আশরাকু’, বেমানান লাগে না? এমনকি এই দুটি রাষ্ট্রের ভেতরেও, আরব অধ্যুষিত অঞ্চল (আহওয়াজ-গাযা) আর ‘ইহুদি-আশরাকু’ অধ্যুষিত অঞ্চলের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। দুটি রাষ্ট্রই জন্ম থেকে আরবদের গলার কাঁটা হয়ে আছে। আরবদের স্বাধীন গতিবিধিতে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে। ক. পূর্ব আরবের সাথে স্থলপথে পশ্চিম আরবের ভাইদের যোগাযোগের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে ইহুদিরাষ্ট্র। খ. শিয়ারাষ্ট্র স্থলপথে বাধা হয়ে আছে, আরব উপদ্বীপ, ইরাক, শামে থাকা মুসলিম ভাই ও মধ্য এশিয়ার মুসলিম ভাইদের মাঝে। একদল নামধারী ‘ইসলামপন্থী, তথাকথিত ইসলামী ‘চিন্তাবিদ’ আমাদের বুঝ দিতে চায়, ইরানের পরাজয় মানে, ইসলাম ও মুসলমানদের পরাজয়। ইরানের বিপযয় মানে, মুসলিম উম্মাহর বিপযয়। ইরানের মার খাওয়া মানে তাওহিদের মার খাওয়া। আল্লাহ তাআলা বিবেকবুদ্ধি দিয়েছেন। সেটা কাজে লাগানো আমাদের অবশ্যকর্তব্য। আচ্ছা, ইহুদি-ইরান প্রতিষ্ঠার পর থেকে এমন কোনো প্রকৃত যুদ্ধের নাম কি বলা যাবে, যেটা অনারব ও অমুসলিমের বিরুদ্ধে লড়েছে? একটাও নয়। দুটি রাষ্ট্রই জন্মামধি যত যুদ্ধে জড়িয়েছে, সবই আরব ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে। এবারই প্রথমবারের মতো দুটি রাষ্ট্র একে অপরের বিরুদ্ধে (হয়তো) প্রকৃত যুদ্ধে জড়িয়েছে। এই প্রথম তারা অনারব-অমুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। দুটি রাষ্ট্র দীর্ঘদিন (৪০ বছর) ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে বাক্যবাণ ছুঁড়েছে, মাঝেমধ্যে মিসাইল-মিসাইল খেলেছে। মিডিয়াবাজি করেছে। ফুটেজ খেয়েছে। ইতিহাস বলে, আরব ও মুসলিমবিরোধী লড়াইয়ে দুটি রাষ্ট্র একে-অপরকে অস্ত্র ও অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করেছে। গত জুমাবার (১৩ জুন) থেকে প্রথমবারের মতো একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। তাহলে যে রাষ্ট্র কখনো আরব ও মুসলমান ছাড়া অন্য কারো বিরুদ্ধে লড়েনি, তার বিজয় বা পরাজয়ে আখেরে ইসলাম ও মুসলমানের কী লাভ? এই প্রশ্নের সন্তোষজনক কোনো উত্তর তাদের কাছে নেই। তারা হল ইহুদি ‘আহবার’-দের মতো, যারা, تَجۡعَلُونَهُۥ قَرَاطِیسَ تُبۡدُونَهَا وَتُخۡفُونَ كَثِیرࣰاۖ যে কিতাবকে তোমরা বিভিন্ন পৃষ্ঠা আকারে রেখে দিয়েছিলে, যার মধ্য হতে কিছু তোমরা প্রকাশ কর এবং যার অনেকাংশ তোমরা গোপন কর (আনআম: ৯১)। ঠিক আছে, উত্তরটা না হয় আমরাই বের করার চেষ্টা করি। এই যুদ্ধে ইরান জয়ী হলে কী হবে? কল্পনার টাইমমেশিনকে একটু পেছনে নিয়ে যেতে পারব? ১৯৭৯ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি। বাসায় টিভি আছে? টিভিটা খুলি। কী দেখা যাচ্ছে? (চলবে) আতিক উল্লাহ হাফিঃ
❤️ 🩷 4

Comments