Al-Huda wa An-Noor
Al-Huda wa An-Noor
June 20, 2025 at 07:54 AM
ইহুদি ও মুশরিকের লড়াই-৫ --- চতুর্থ প্রমাণ ইরাকের সাথ না হয় শত্রুতা ছিল, সাদ্দাম কমিউনিস্ট ছিল, এজন্য আমেরিকা-ইসরায়েলের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তান কী দোষ করেছিল? ইরান কেন প্রথম তালেবান সরকার পতনে আমেরিকার পাশে ছিল? তালেবান তো শরিয়া আইন মোতাবেক দেশ শাসন করছিল, ইরান যদি এতই ইসলামী বিপ্লবী হয়, তালেবানের বিরুদ্ধে আমেরিকার পাশে দাঁড়ানোর কারণ কী? আফগানের হাজারা শিয়াদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সুন্নীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠানোর কারণ কী? ইরান ২০১০ সালের পর তালেবানের প্রতি মৃদু সমর্থন ব্যক্ত করতে শুরু করেছিল। সেটাও ঠেলায় পড়ে। আমেরিকার পক্ষ থেকে কঠিন নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর। তবে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পযন্ত ইরান শতভাগ তালেবান বিরোধী জোটে ছিল। ২০০১ থেকে ২০১০ পযন্ত আমেরিকার প্রতি মৌন সমর্থন জানিয়ে গেছে। পঞ্চম প্রমাণ ২০০৬ সালে হাসান নাসরুল্লাহর নির্দেশে হিযবুল্লাহর সেনারা দুইজন ইসরায়েলি সেনা বন্দী করে, ৮ জনকে নিহত করে। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইসরায়েলে লেবাননের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল। এখন গাযার ওপর যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, বৈরুতেও ইসরায়েল তেমন করেছিল। সেই হামলার ধরণ থেকেই ‘দাহিয়া ডকট্রিন’-এর জন্ম হয়েছিল। তখন পুরো আরব তো বটেই, মুসলিমবিশ্ব হাসান নাসরুল্লাহর পাশে দাঁড়িয়েছিল। ইখওয়ানুল মুসলিমুনের সপ্তম মুরশিদে আম ‘মাহদী আকেফ’ ঘোষণা দিয়েছিলেন, হিযবুল্লাহর সমর্থনে ও সাহায্যে মিসর থেকে ১০ হাজার ইখওয়ান সদস্য পাঠাবেন। কায়রো, দামেশক, বাগদাদসহ পুরো মুসলিম বিশ্বের রাজপথ হাসান নাসরুল্লাহর সমর্থন ও ছবিতে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। হিযবুল্লাহর প্রতি এমন নিরংকুশ সমর্থন করার ব্যাপারে দূরদর্শী ব্যক্তিরা সতর্ক করেছিলেন। এর ভয়াবহ পরিণতির কথা ভেবে তারা শঙ্কিত হয়ে উঠছিলেন। শিয়া মিডিয়াগুলো হাসান নাসরুল্লাহকে অতিমানবের পযায়ে নিয়ে গিয়েছিল। সরলমনা সুন্নীরা শিয়া মিডিয়ার ফাঁদে পা দিয়ে বসেছিল। হাসান নাসরুল্লাহর বিরোধিতাকারীদেরকে আজকের মতো সেদিনও ‘বেকুব, নির্বোধ, রাজনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ, ওহাবি, সালাফি ইত্যাদি বলে গাল দেয়া হয়েছিল। সবার একটাই কথা, এই মুহূর্তে হাসান নাসরুল্লাহর পাশে দাঁড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। যেমনটা এখন বলা হচ্ছে। সবার সাহায্য-সমর্থন পেয়ে হাসান আমাদেরকে মসজিদে আকসায় নিয়ে যাবে। বেশিদিন অপেক্ষা করতে হল না। মাত্র ৭ বছর পর সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে একদিন সত্যি সত্যি হাসান নাসরুল্লাহ কুদসের পথে রওয়ানা দিল। সবাই অবাক, হাসান তার সেনাবাহিনী নিয়ে উত্তর দিকে যাচ্ছে। -কী ব্যাপার, ছেঃইখ, কুদস তো দক্ষিণে, আপনি সসৈন্যে উত্তর দিকে যাচ্ছেন যে বড়? -আমি কুদসজয়ের পথেই হাঁটছি। আমি সিরিয়ার সুন্নী অধ্যুষিত কালামুন, যাবদানী, হিমস, দারআ, হালাব, সুয়াইদা, হাসাকা, হামা শহর পেরিয়ে কুদসে পৌঁছব। কদিন পর হাসানের মুরিদরা দেখল, হাসানের চেলাচামুণ্ডারা সিরিয়ায় সুন্নী অধ্যুষিত অঞ্চলের শহরের পর শহরে হত্যা, লুঠ, ধর্ষণের মচ্ছব শুরু করে দিয়েছিল। সুন্নীদের মসজিদ, মাদরাসা, খানকা, এমনকি কবরস্তান পযন্ত হিযবুশ শয়তান বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পায়নি। কুদস যাওয়ার পথে শয়তানবাহিনী দামেশক-তেহরান-মস্কোর সাহায্যে সুন্নীদের গ্রামে গ্রামে এমন নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছিল, হালাকু খান, চেঙ্গিস খান মিলেও এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারত কি না সন্দেহ। ২০১৫ সাল। সিরিয়ায় আসাদবিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। দামেশকের পতন তখন সময়ের ব্যাপার। যে কোনো দিন বাশার পালাবে। তেহরানের খোমেনিরা ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল। ২০১১ সাল থেকেই ইরান সক্রিয়ভাবে বাশারকে সাহায্য করে আসছিল। হিযবুল্লাহ, শিয়া মিলিশিয়া, কুদস ফোর্স মিলেও আসাদবিরোধী শক্তিকে দমাতে পারছিল না। তখন ইরানী কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সুলেমানি (১৯৫৭-২০২০) ২০১৫ সালের জুলাই মাসে মস্কোগামী বিমানে উঠে বসল। উদ্দেশ্য নব্য ক্রুশেডার পুতিনকে বাশারের সমর্থনে টেনে আনা। কাসেইম্মা মাত্র দুই ঘণ্টা মস্কো অবস্থান করেছিল। আল্লাহমালুম মাত্র দুই ঘণ্টায় পুতিনকে কী পানিপড়া খাইয়েছিল। এরপরই পুতিন সদলবলে এসে সিরিয়ায় আসাদবিরোধীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। নিশ্চয়ই ইরান এসব ইসলাম, মুসলমান ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণের জন্যই করেছিল?
❤️ 🩷 2

Comments