
𝑺𝒊𝒓𝒂𝒕 𝑨𝒍-𝑴𝒖𝒔𝒕𝒂𝒒𝒊𝒎
June 17, 2025 at 04:29 PM
সনটি ছিলো ১৩৪৪ ইংরেজী । সিলেটে হি'ন্দু রাজা গৌ'র গো'বিন্দের রাজ্যের এক মহল্লায় ১৩টি মুসলিম পরিবার বাস করতেন। তারই একজন ছিলেন শেখ বুরহান উদ্দিন। তিনি হি'ন্দু জা'লিম রাজা গৌ'র গো'বিন্দের কারণে গোপনে ইবাদত-বন্দেগী করতেন। কারণ, সেখানে প্রকাশ্যে মুসলমানদের জন্য ইবাদত-বন্দেগী করা নি'ষিদ্ধ ছিলো। কেউই গরু জ'বাই ও কুরবানী করতে পারতো না।
শেখ বুরহান উদ্দিনের কোনো সন্তান ছিলো না। সন্তানের জন্য মহান আল্লাহ পাকের নিকট দোয়া করে তিনি নিয়ত করলেন, যদি তার একটি সন্তান হয় তাহলে তিনি শুকরিয়া স্বরূপ মহান আল্লাহর নামে একটি গরু কুরবানী করবেন। কিছুদিন অপেক্ষার পর সত্যি সত্যিই ঘরআলো করে একজন ফুটফুটে সন্তান জন্ম নিলো। খুশি হয়ে বুরহানুদ্দীন শুকরিয়া করে নিয়ত মুতাবিক একদিন গোপনে একটি গরু কুরবানী করে গোশত মুসলমানদের মধ্যে বিলি করতে লাগলেন। এমন সময় একটি কাক এসে ছোঁ মেরে এক টুকরা গোশত নিয়ে গেলো। মহান আল্লাহ পাক উনার কি কুদরত, কাক গোশতের টুকরাটি ফেললো গৌ'র গো'বিন্দের ম'ন্দি'রের প্রধান প্রবেশ পথে। গোবিন্দ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৈন্য পাঠিয়ে শেখ বুরহান উদ্দিনকে রাজার সামনে উপস্থিত করলো।
জা'লিম হিন্দু রাজা গৌ'ড় গো'বিন্দ বুরহান উদ্দিনের ডান হাত কে'টে দিলো। নিষ্পাপ সদ্য জন্ম নেয়া শিশু (গুলজার)-কে কথিত দে'বতার সামনে ব'লি দিলো।
এ অবস্থা দেখে শিশুটির মা অর্থাৎ শেখ বুরহান উদ্দিনের স্ত্রী অ'জ্ঞান হয়ে মৃত্যু বরণ করলেন। শুধু এতটুকুই নয়, ওই জা'লিম গো'বিন্দ ওই দিনই আ'ক্রমণ চালিয়ে ওই এলাকার সকল মুসলমানদেরকে নি'র্ম'মভাবে শ'হীদ করে ফেললো!
অত্যন্ত ব্যথিত অন্তরে শেখ বুরহান উদ্দিন পায়ে হেঁটে উপস্থিত হলেন সোনারগাঁয়ে শামসুদ্দিন ইলিয়াসশাহের দরবারে। ইলিয়াস শাহ সব শুনে জা'লিম হি'ন্দু রাজা গৌ'র গো'বিন্দকে শা'স্তি দেয়ার জন্য সৈন্য-সামন্ত পাঠালেন যু'দ্ধ করার জন্য। বেশ কিছুদিন যু'দ্ধ হলো, শত শত মুসলিম সৈন্য শ'হীদ হলো। কিন্তু জয় করা হলো না।এরপর শেখ বুরহান উদ্দিন রওয়ানা হলেন দিল্লির পথে। দিল্লির সম্রাট আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ তুঘলকের সামনে। তিনি বুরহান উদ্দিনের নিকট হতে সব বিষয় শুনে যবন গো'বিন্দকে শায়েস্তা করার জন্য সৈন্যসহ সিকান্দার গাজীকে সেনাপতি করে অভিযানে পাঠালেন। কিন্তু পথিমধ্যে অনেক প্রতিকূলতার কারণে তারা দিল্লিতে ফিরে গেলেন।
অতঃপর নতুন কিছু সৈন্যসহ আর একজন বীর সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনকে সেনাপতি করা হলো। সম্রাটের আদেশ পেয়ে তিনি দোয়া নিতে গেলেন তাঁর পীর শায়েখ হযরত খাজা নিজাম উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে। তখন ওখানেই অবস্থান করছিলেন হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি। সবকিছু শুনে হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি সিদ্ধান্ত নিলেন তিনিও সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনের সাথে এই অভিযানে যাবেন।
অতঃপর হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ৩৬০ জন সঙ্গী নিয়ে সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনের সৈন্যবাহিনীর সাথে রওয়ানা দিলেন।
পথিমধ্যে গৌ'র গো'বিন্দের সৈন্যদের সাথে তুমুল যু'দ্ধ শুরু হয়। ওলীয়ে কামিলগণ উনাদের দোয়া, মহান আল্লাহ পাক উনার গায়েবী মদদ এবং হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রূহানিয়তের নিকট গৌ'র গো'বিন্দের যাদু'মন্ত্র অকার্যকর হয়ে তার বাহিনীর চরম পরাজয় হলো। নি'হত হলো গো'বিন্দের সেনাপতি মনা রায়। মুসলিম বাহিনী অগ্রসর হতে থাকলো গৌ'র গো'বিন্দের রাজধানী অভিমুখে। সুরমা নদী পার হয়ে মুসলিম বাহিনী যখন প্রাসাদের নিকটবর্তী হলো, তখন হি'ন্দু রাজা গৌ'র গো'বিন্দ প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে যায়। মুসলমানের আযানের ধ্বনিতে গৌ'র গো'বিন্দের প্রা'সাদ ও ম'ন্দির ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
উদিত হলো নতুন সূর্য। উড়তে লাগলো ইসলামের পতাকা। গৌ'র গৌ'বিন্দের রাজ্যের নতুন নাম হলো জালালাবাদ।।
— তথ্যসূত্র শ্রী'হট্টে ইসলাম জ্যোতি, মুফতি আজহারুদ্দীন সিদ্দিকি, উৎস প্রকাশন ঢাকা
❤️
4